বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ লোহিত সাগর। প্রতিবছর অন্তত ১৭ হাজার জাহাজ এবং বিশ্ব বাণিজ্যের ১০ শতাংশ এ পথে পরিচালিত হয়। ভারত মহাসাগর থেকে ইউরোপে যেতে হলে সবচেয়ে সহজ ও কম খরচের পথ হল লোহিত সাগর পাড়ি দেয়া। অর্থাৎ এশিয়া, আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে পণ্য ইউরোপে পাঠাতে, অথবা ইউরোপ থেকে পণ্য এসব গন্তব্যে পাঠাতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা পথ এটা।
সম্প্রতি লোহিত সাগরে একের পর এক হুতি বিদ্রোহীদের হামলায় এ পথে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অনেক শিপিং কোম্পানি। বিকল্প পথে ৪ থেকে ৫ হাজার কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে ইউরোপ ও আমেরিকায়। অতিরিক্ত জ্বালানি খরচের সঙ্গে গন্তব্যে পৌঁছাতে ১২ থেকে ১৩ দিন সময় বেশি লাগছে। এতে জাহাজের সার্বিক পরিচালন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে অপারেটররা।
বাংলাদেশেও অধিকাংশ শিপিং লাইন ১ জানুয়ারি থেকে বেশি ভাড়া ও মাশুল আরোপের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। এক্ষেত্রে ২০ ফুট কন্টেইনারে ৫০০ থেকে ৭০০ ডলার ও ৪০ ফুট কন্টেইনারে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ ডলার করে বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া যথাসময়ে পণ্য শিপমেন্ট না হলে বাড়বে ভাড়ার হার।
রিলায়েন্স শিপিং এর নির্বাহী পিরচালক ওয়াহিদ আলম বলেন, 'জাহাজের অপারেটিং খরচ বাড়ার সাথে কার্গো খরচও বেড়েছে। এজন্য অনেক শিপিং লাইন ভাড়া বাড়িয়েছে।'
বাংলাদেশ থেকে মোট রপ্তানির প্রায় ৭০ শতাংশের বেশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল ও কানাডার বন্দরে হয়ে থাকে। যা মূলত লোহিত সাগর দিয়ে যায়। দেশের আমদানির ৮ থেকে ১০ শতাংশ আসে এ পথ দিয়ে। এক্ষেত্রে বর্তমান ভাড়ার সমপরিমাণ মাশুল আরোপ হলে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতির মুখে পড়ার শঙ্কা ব্যবসায়ীদের।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বছরে প্রায় ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার জাহাজ আমদানি ও রপ্তানি পণ্য পরিবহন হয়। সমুদ্রপথে বছরে পণ্য পরিবহন বাবদ খরচ হয় অন্তত ১০ বিলিয়ন ডলার।