এশিয়া
বিদেশে এখন
0

মিগজাউমে মৃত্যু বেড়ে ২৩, ভারতের দুই রাজ্যে বন্যা

Shahinur Sarkar

সাইক্লোন মিগজাউমে ভারতের চেন্নাই শহরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ২৩ জনে। তামিলনাড়ু-অন্ধ্র প্রদেশে আঘাত শেষে ঝড়টি উত্তরে সরে গেলেও তীব্র বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে দুই রাজ্যেই।

সুপার-সাইক্লোন মিগজাউমের প্রভাবে দুর্যোগপূর্ণ দুটি রাত পার করলেও বুধবার রৌদ্রজ্জ্বল দিনের দেখা পায় চেন্নাইবাসী। তবে এখনও তীব্র জলাবদ্ধতার কবলে পুরো শহর ও আশপাশের কয়েকটি জেলা। কোমর পর্যন্ত পানির মধ্যেই সহায়-সম্বল রক্ষার চেষ্টা করছেন বাসিন্দারা। রাস্তা থেকে পানি নিয়ে খালে ফেলতে প্রায় ৬শ' পাম্প বসিয়েছে প্রশাসন।

মিগজাউমের প্রভাবে ভারতের তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাইসহ উপকূলীয় কয়েকটি জেলায় দু'দিনে ৪৬ সেন্টিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তলিয়ে গেছে ভবন, বাসাবাড়ি, যানবাহন। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, 'আমাদের বাড়ির নিচতলা প্রায় পুরোটাই পানির নিচে চলে গেছে। অনেকগুলো সাপও দেখেছি আমরা। বাচ্চাদের জন্য ভয় লাগছে।'

বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন কয়েক লাখ মানুষ। বন্যার কারণে বিশুদ্ধ পানি বা পর্যাপ্ত খাবারও নাগালের বাইরে চলে গেছে। ৬১ হাজারের বেশি মানুষের ঠাঁই হয়েছে ৪শ'র বেশি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে। আকাশ থেকে মানুষের জন্য খাবারের প্যাকেট ফেলছে বিমানবাহিনী, সেগুলো নিয়ে নৌকা দিয়ে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। রেকর্ড বৃষ্টিতে সড়ক, ভবনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কেন্দ্রের কাছে পাঁচ হাজার কোটি রুপির সহায়তা চেয়েছে তামিলনাড়ু রাজ্য সরকার। আজও বন্ধ চেন্নাইসহ চার জেলার সব স্কুল-কলেজ।

এক স্বেচ্ছাসেবক জানান, 'সকাল থেকে কাজ করছি। পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারে কয়েকটি নৌকা নামিয়েছি বিভিন্ন এলাকায়। নারী আর রোগীদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে উদ্ধারকাজে। এরইমধ্যে ৬০ জনের বেশি রোগীকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের দুধ, পানির বোতল আর বিস্কুট দেয়া হচ্ছে।'

সোমবার তামিলনাড়ুর পর মঙ্গলবার ঘণ্টায় ১শ' কিলোমিটারের বেশি গতিতে অন্ধ্র প্রদেশেও আঘাত হানে মিগজাউম। বুধবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যটিতে ২শ' মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হবে বলে আভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। ঝড়ের তাণ্ডবে রাজ্যের ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বাতিল হয়েছে প্রায় দেড়শ' ট্রেন ও অর্ধশত ফ্লাইটের পূর্বনির্ধারিত যাত্রা।

ভারতের ন্যাশনাল ডিজাসটার রেসপন্স ফোর্স-এসডিআরএফ এর কর্মকর্তা এন এস বুন্দেলা বলেন, 'অন্ধ্র প্রদেশে এখনও ঝড়ের তাণ্ডব চলছে। তবে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে যে দ্রুতই সাইক্লোনটি গতি হারাবে। আশা করছি, সে অনুযায়ী পরিস্থিতি ভালো হবে। এরপর দুর্যোগপরবর্তী তৎপরতা শুরু করবো আমরা।'

এদিকে ঝড়ে যেন কৃষকরা কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, তা নিশ্চিতে সব শস্য কিনে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্য সরকার। অন্ধ্র প্রদেশে আঘাত হানার পর ঝড়টি দুর্বল হতে শুরু করলেও এগিয়ে যাচ্ছে উত্তর দিকে। এতে অতিবৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে ওডিশাসহ কয়েকটি রাজ্যে।

এসএসএস