যেখানে নক্ষত্রেরা থেমে গেছে, আর বাতাসও যেন বাজাচ্ছে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর সারোদের সুরে। আজকের রাত যেন এক সুরের মন্দির। ১৮৬২ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন এ গুণী শিল্পী। ইতিহাসের দেয়ালজুড়ে ঝুলছে সুরের স্মৃতি, সেই স্মৃতির মেলবন্ধনে আয়োজন করা হয় এক বর্ণিল সঙ্গীত সন্ধ্যা।
রাজধানীর লালবাগ কেল্লায় বাংলাদেশ শিল্পকলা অ্যাকাডেমির আয়োজনে পালিত হলো মহান এ সুরসাধকের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জমকালো সঙ্গীত সন্ধ্যা। উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, আদিলুর রহমান খানসহ বিদেশি কূটনৈতিক এবং দেশসেরা সঙ্গীত ও অভিনয় শিল্পীরা।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘আমরা গাজাবাসীদের প্রতি সংহতি জানাচ্ছি আজকের এ অনুষ্ঠান থেকে। ফ্লোটিলার মানবাধিকার কর্মীরা বন্দি হয়েছেন ইসরাইলের হাতে। আমরা মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ফিলিস্তিনের মানুষেরা অনেক সাহসী। অনেক দেশই তাদের স্বীকৃতি দিয়েছে। আমরা আশাবাদী আমরা আবার সেই ফিলিস্তিন দেখবো যেখানে আর কেউ বন্দি থাকবে না।’
সঙ্গীত সন্ধ্যার শুরুতেই ফিলিস্তিনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা জানিয়ে ইসরাইলের কঠোর সমালোচনার মধ্যে দিয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাবৃন্দ। ঘড়ির কাটায় তখন ঠিক দশটা বেজে ৫ মিনিট। নিস্তব্ধ পরিবেশ আর হিমেল হওয়ার মধ্য দিয়ে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।
শত বছর পর নিজ মহিমায় প্রাণ ফিরে পায় পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী লালবাগ কেল্লা। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খার নাতি শিল্পী সিরাজ আলি খাঁ সুরের ঝংকারে মাতিয়ে রাখে পুরোটা সময়। এখন টেলিভিশনকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেন তার দাদার স্মৃতি।
আলাউদ্দিন খাঁর নাতি শিল্পী সিরাজ আলি খাঁ বলেন, ‘যে যন্ত্রটা আমি বাজাবো সেটা উনারই যন্ত্র। ১৫০ বছর পুরনো। যে যন্ত্রটা উনি বাজাতেন শরদে। যেহেতু আমি লেফট হ্যান্ডেড, আমি বাঁ হাতে শরদ বাজাই, আমার পরিবার থেকেই আমি এটা পেয়েছি। আজকে আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।’
তারার নিচে তারের সুর যখন বাজে, মনে হয় আকাশ যেন তবলায় তাল দিচ্ছে বেহালার কাঁপনে জেগে ওঠে আলাউদ্দিনের আত্মা, তার সৃষ্ট রাগ যেন ছুঁয়ে যায় প্রতিটা ভক্তের মন।





