নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার সরকুতিয়া গ্রামের পেঁয়াজ চাষি হাফিজুল ইসলাম চলতি মৌসুমে দুই বিঘা জমিতে আগাম জাতের পেঁয়াজ চাষ করেন। রোপণের ৯০ থেকে ১১০ দিনের মধ্যেই ক্ষেত থেকে তুলতে শুরু করেছেন পেঁয়াজ। বিঘাপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ করে বিঘায় ফলন পাচ্ছেন ৯০ থেকে ১০০ মন। তাছাড়া প্রতিকেজি উৎপাদন খরচ ১৬ থেকে ১৭ টাকা পড়লেও বিক্রি করছেন ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়।
ভারতের নাসিক এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষে খরচ কম হওয়ায় প্রতিবছর আগ্রহ বাড়ছে নাটোরের কৃষকদের। উচ্চ ফলনের পাশাপাশি মৌসুমের শুরুতে দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। এরইমধ্যে নতুন এই পেঁয়াজ বাজারে তুলতে শুরু করেছেন কৃষকরা। সর্বনিম্ন দুই হাজার ৮০০ থেকে তিন হাজার টাকা মণ পেঁয়াজ বিক্রি করছেন তারা। তবে নতুন এ পেঁয়াজ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পুরোপুরি বাজারে উঠলে পেঁয়াজের বাজার দর কমে যাওয়ার আশা কৃষি বিভাগের।
পেঁয়াজ চাষি হাফিজুল ইসলাম। ছবি: এখন টিভি
চাষি হাফিজুল ইসলাম বলেন, 'আমরা বিঘাপ্রতি এটা ফলন পাই মোটামুটি ৯০ থেকে ১০০ মণ হারে। এ বছর দামও মোটামুটি ভালো আছে।'
নলডাঙ্গার উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা রুহুল আমীন বলেন, 'পেঁয়াজ যখন বাজারে যাবে এবং অন্য পেঁয়াজের চাহিদাটা কমে যাবে তখন দামে কম হবে।'
বছরের জুলাই, আগস্ট এবং সেপ্টেম্বর- এই তিন মাস পেঁয়াজ চাষের জন্য আপৎকালীন সময়। এই সময়টা বর্ষাকাল হওয়ায় বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ার পাশাপাশি বাড়ে দামও। তবে কৃষি বিভাগ আপৎকালীন সময়ে পেঁয়াজের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রতিবছর পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের আগ্রহ করতে প্রণোদনা দিয়ে আসছে। সার, বীজের পাশাপাশি নগদ টাকা প্রণোদনা দেয়ায় এ বছর জেলায় মোট ৫০০ জন কৃষক ৪৫০ বিঘা জমিতে চাষ করেন গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ।
নলডাঙ্গার উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা শরীয়তুল্ল্যা সরদার বলেন, 'আমরা নলডাঙ্গা উপজেলায় ১৫০ জন কৃষককে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ নাসিক এন-৫৩ প্রণোদনা দিয়েছি, বীজ দিয়েছি, সার দিয়েছি, ওষুধ দিয়েছি।'
গত বছর নাটোর জেলায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছিল আড়াই হাজার টন। এ বছর সেখানে এক হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ১৩ কোটি টাকা।