মড়কে কমেছে মরিচের ফলন, দামে হতাশ পঞ্চগড়ের চাষিরা

পঞ্চগড়ে মরিচ চাষ
পঞ্চগড়ে মরিচ চাষ | ছবি: এখন টিভি
0

পঞ্চগড়ের অন্যতম অর্থকরী ফসল মরিচ। গেলো কয়েক বছর ভালো দাম পাওয়ায় বেড়েছে চাষের পরিধি। তবে এবার মড়ক লেগে কমেছে ফলন। পাশাপাশি দামও নেমেছে অর্ধেকে। গেলো বছর ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা মণের শুকনা মরিচ এবার বিক্রি হচ্ছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায়। উৎপাদন খরচ বাড়ার পর কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে হতাশ চাষিরা।

চলছে মরিচের ভরা মৌসুম। কৃষকের জমিতে শোভা পাচ্ছে কাঁচা-পাকা মরিচ। যেখান থেকে পাকা মরিচ তুলে পাশের ফাঁকা জমিতে শুকাতে দিচ্ছেন চাষিরা। পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুরের মাঠে থরে থরে সাজানো কৃষকের স্বপ্ন। প্রক্রিয়াকরণ শেষে যা চলে যাবে দেশের নানা প্রান্তে।

চাষিরা বলছেন, প্রতিবার বাঁশগাইয়া, আকাশি, জিরাসহ উচ্চ ফলনশীল নানা জাতের দেশি মরিচ আবাদ করেন তারা। তবে গেলো বছর বিঘায় ১০ থেকে ১২ মণ শুকনো মরিচ পাওয়া গেলেও এবার মিলছে ৬ থেকে ৮ মণ।

কৃষকদের একজন বলেন, ‘পোকামাকড় আমাদের শেষ করে দিয়েছে। ওষুধ দিই, কাজ করে না।’ আরেকজন বলেন, ‘এবার মরিচের দাম নেই, ফলনও কম হয়েছে।’

এ ছাড়া কয়েক বছরের তুলনায় এবার মরিচ চাষে খরচ বাড়লেও দাম নেমেছে অর্ধেকে। গেলো বার প্রতি মণ শুকনো মরিচ ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও। এবার বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায়।

কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় হতাশ একজন কৃষক বলেন, ‘গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় এবার একটু বেশি মরিচ লাগিয়েছিলাম, কিন্তু এবার আরো কম পাচ্ছি।’

প্রতিদিন জেলা থেকে ১০ থেকে ১৫ ট্রাক শুকনা মরিচ পাঠানো হয় দেশের নানা প্রান্তে। ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে এখনো গত মৌসুমের মরিচ মজুত থাকায় কমেছে দর।

ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘যদি পুরাতন মরিচটা শেষ হয়ে যায়, তাহলে আশা করছি এই নতুন মরিচের ভালো দাম পাবো আমরা।’

আগে কেবল খাবার জন্য করলেও এখন পঞ্চগড়ের কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে করছেন মরিচ আবাদ। চলতি মৌসুমে জেলায় ৯ হাজার ১৪৫ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। এবার আড়াইশ থেকে ৩০০ কোটি টাকার মরিচ বিক্রির আশা কৃষকদের।

পঞ্চগড়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল মতিন বলেন, ‘আমরা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পক্ষ থেকে মরিচ উৎপাদনের বিভিন্ন কলা কৌশল হাতে কলমে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। বিশেষ করে মরিচ চাষের প্রক্রিয়া এবং বিভিন্ন পোকামাকড় সম্পর্কেও তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি।’

ন্যায্যমূল্য পেলে আগামীতে মরিচ চাষের পরিধি যেমন বাড়বে তেমনি উত্তরের লালসোনা হিসেবে পরিচিত এই মরিচ প্রান্তিক এ জেলার কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এসএইচ