শেরপুরে ৬০০ বিঘা বোরো জমিতে পচন রোগ

0

শেরপুর সদরের পাঁচটি গ্রামের প্রায় ৬০০ বিঘা জমির বোরো ধানের চারায় অজ্ঞাত পচন রোগ ধরেছে। নির্দিষ্ট কারণ জানাতে না পারলেও কৃষকদের ভুল ও নিম্নমানের বীজের কারণে এই সমস্যা হতে পারে বলে ধারণা করছে কৃষি বিভাগ। এসব জমি থেকে ফলন না পাওয়ার শঙ্কায় দিশেহারা শতাধিক কৃষক।

সদর উপজেলার আব্দুল জলিল নামের এক কৃষক প্রতিবছরের মতো এবারও নিজের ১ একর জমিতে ব্রি-২৯ জাতের ধানের চারা আবাদ করেন। জমি প্রস্তুত, বীজ কেনা, সার-কিটনাশক ও পরিচর্যা মিলিয়ে তার অন্তত ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

কিন্তু হঠাৎ ধানের চারা গাছে অজ্ঞাত পচন রোগ হয়েছে। এ রোগে প্রথমে গাছের পাতা কুঁকড়ে হলুদ বর্ণ ধারণ করে। পরে হালকা লালচে রং ধারণ করে মারা যায় ধানের চারা। শুরুতে অল্প কয়েকটি চারায় এই রোগের আক্রমণ হলেও এখন পুরো জমিতে ছড়িয়েছে। কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগেও সুফল মিলছে না।

চাষি আব্দুল জলিল বলেন, ‘১ কাটাতে তিন হাজার টাকা আমার খরচ হইছে। এখন ধান মইরা যাইতাছে, খামু কি?’

একই অবস্থা পাকুরিয়া ইউনিয়নের খামারপাড়া, বাদাপাড়া, বাটিয়াপাড়া, পূর্বপাড়া, ফকিরপাড়া গ্রামের কৃষকদের। যাদের অনেকেই ঋণ নিয়ে ধানের আবাদ করেছিলেন। এমন অবস্থায় ঋণ শোধের চেয়ে বছরের খোরাকি নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তারা।

চাষিরা বলেন, ‘অনেক সার আর বিষ দিতাছি কিন্তু কাজে লাগতাছে না। আমাদের কেউ দেখতেও আসে না। আমরা চিন্তায় শেষ হইয়া যাইতাছি।’

কৃষকরা অন্যান্য জাতের চারাও রোপণ করেছেন। এর মধ্যে শুধু ব্রি ধান-২৯ রোগাক্রান্ত হয়েছে। নিম্নমানের বীজের কারণে এমনটি হয়েছে বলে জানান সদর কৃষি কর্মকর্তা মুসলিমা খানম নীলু। তিনি বলেন, ‘কৃষকদেরকে বিঘাপ্রতি পাঁচ কেজি পটাশ আর বিভিন্ন ছত্রাকনাশক ওষুধ ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছি।’

এমন অবস্থায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বীজ কোম্পানির কাছ থেকে কৃষকদের ক্ষতিপূরণের দাবি করেছেন শেরপুর সদর কৃষক সমিতির আহ্বায়ক সোলাইমান আহাম্মেদ। তিনি বলেন, ‘ক্ষতিপূরণ দিয়ে কৃষকদেরকে পুনর্বাসিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কারণ বীজ প্রত্যায়ন অফিস থেকে প্রত্যায়িত বীজ বাজারে বিক্রি করা হয়। আর সেই কোম্পানির বীজ কিনে কৃষক রোপণ করে।’

এ বছর জেলায় অন্তত ৯২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। ইতোমধ্যে যার ৯৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।