চলতি মৌসুমে চলনবিলসহ জেলার প্রায় ৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে যা প্রায় ২৪ হাজার হেক্টর বেশি। উন্নত জাত ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বিঘাপ্রতি ৬ থেকে ৭ মণ সরিষা উৎপাদন হবে। কম খরচ ও ভালো চাহিদা থাকায় কৃষকদের লাভের আশা।
চলনবিলের কৃষকরা বলেন, 'গতবছরের সরিষায় ভালো লাভ হইসে। তাই এইবার একটু বেশি চাষ করসি। আমার ১০ বিঘায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হইসে। আশা করছি ২ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো। মৌমাছি আসার কারণে পরাগায়ণটা ভালো হইসে তাই ফলনও বৃদ্ধি পাইসে।'
সরিষার ফুলে ফুলে মধু সংগ্রহে মৌমাছির দল ব্যস্ত। এবার জেলার বিভিন্ন প্রান্তে তিন হাজারের বেশি মৌ বাক্স বসিয়েছেন ২ শতাধিক মৌ খামারি। যারা প্রতিটন মধু বিক্রি করছেন দেড় থেকে দুই লাখ টাকায়। এ মৌসুমে ৩৬০ টন মধু সংগ্রহের লক্ষ্য কৃষি বিভাগের। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ১০ কোটি টাকা।
মৌ খামারিরা বলেন, 'একটা বক্সে প্রতি সপ্তাহে আড়াই থেকে তিন কেজি মধু আসে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ৩ টন মধু এখান থেকে আসবে।'
সরিষা ফুলে সংগ্রহ করছে মৌমাছি
ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে কৃষকদের পরামর্শসহ নানা সহায়তার কথা জানান তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন। বলেন, 'স্বল্পকালীন এবং লাভজনক ফসল হওয়াতে দিন দিন সরিষার উৎপাদন বাড়ছে। ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে। ৩ বছরে ৪০ শতাংশ কমানোর যে লক্ষ্য তা এবছরেই পূরণ করে ফেলেছি। আগামী বছর সরিষার উৎপাদন আরও বাড়বে বলে আশা করছি।'
এবার ১ লাখ ৩০ হাজার টনের বেশি সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। যার বাজারদর প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা।
ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি সরিষা চাষ করে নিজেদের ভাগ্যের চাকা ঘুরাচ্ছেন চলনবিলের কৃষকরা। সরিষা চাষের পাশাপাশি ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে বাণিজ্যিকীকরণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হচ্ছে এখানকার বেকার যুবকরা। দেশের কৃষি অর্থনীতিতেও নীরব ভূমিকা রাখছে।