মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ
কৃষি
0

হাওরের শুঁটকিতে জমজমাট কিশোরগঞ্জের বড়বাজার

বাঙালির রসনা বিলাসে চ্যাঁপা শুঁটকির কদর অনন্য। আর এই সুস্বাদু শুঁটকির সবচেয়ে বড় ঘাঁটি কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বড়বাজার। শতবছরের পুরনো এই বাজারে সপ্তাহে দুদিন জমে উঠে শুঁটকির হাট। যেখানে কেনা-বেচা হয় ৩ থেকে ৪ কোটি টাকার শুঁটকি।

কিশোরগঞ্জের বড়বাজার। জনপ্রিয় চ্যাঁপা শুটকির জন্য বিশেষভাবে খ্যাত। সপ্তাহের বুধ ও বৃহস্পতিবার হাওরের মাছের শুঁটকিতে জমে ওঠে এই বাজার। জেলার ইটনা, মিঠামইন, নিকলী ও অষ্টগ্রাম ছাড়াও পার্শ্ববর্তী সিলেট সুনামগঞ্জ থেকে আসে শুঁটকি। চ্যাঁপা শুঁটকিরও সবচেয়ে বড় সরবরাহ কেন্দ্র এটি।

হাওরে পানি কমে এলে পুঁটি মাছে ভরে ওঠে আড়তগুলো। সেসব মাছ রোদে শুকিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি হয় শত শত মণ চ্যাঁপা শুঁটকি। হাটে প্রতি মণ চ্যাঁপা শুঁটকি বিক্রি হয় সর্বোচ্চ ৪০ থেকে সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা দরে। আর খুচরায় প্রতি কেজি শুঁটকি বিক্রি হচ্ছে ৮শ' থেকে ১৬শ' টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে রপ্তানির দুয়ার খুলতে পারে এই শিল্পে।

বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দ বলছেন, বড়বাজার থেকে প্রতিদিন বিক্রি হয় ৩ থেকে ৪ কোটি টাকার শুঁটকি। তবে অবকাঠামো উন্নয়ন ও স্থান সংকট নিরসন করা গেলে ব্যবসার আরও প্রসার হবে বলে মনে করছেন তারা।

কিশোরগঞ্জ বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘কিশোরগঞ্জের যত মাছের শুঁটকি রয়েছে তা এই বড় বাজারে আসে। আমাদের চাহিদা মিটিয়েও এটি বাহিরে রপ্তানি করা হয়। সরকারের সুদৃষ্টি থাকলে এ বাজারটি আরো সম্প্রসারণ করা সম্ভব।’

শুঁটকি শিল্পকে আরও এগিয়ে নিতে মাছ উৎপাদনে জোর দেয়ার কথা বলছে মৎস্য বিভাগ। একই সঙ্গে বিদেশে রপ্তানির বিষয়েও আলোচনা চলছে বলে জানান কর্মকর্তারা।

কিশোরগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা শুঁটকি মাছগুলো মানসম্মতভাবে তৈরি হচ্ছে ও আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি হচ্ছে কিনা তা দেখছি। আমরা মাছের প্রজননের জন্য জ্যৈষ্ঠ মাসে হাওর অঞ্চলে মাছ ধরা নিষিদ্ধ রাখবো।’ প্রতি মাসে বড় বাজারে বিক্রি হয় ৩ হাজার মণ চ্যাঁপা শুঁটকি।

এএম