সাতক্ষীরার মাঠজুড়ে দেখা মেলে বিনা-১৭ জাতের ধান। চলতি বছর প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে জেলার বেশকিছু এলাকায় চাষ করা হয় এই ধান। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উপকেন্দ্র সাতক্ষীরার পরিচালিত গবেষণা ও সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে এসব ধানের চাষ হচ্ছে।
তালা উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের দাদপুর গ্রামের কৃষকরা এবারই প্রথম চাষ করেছেন সুফলা এই জাতের ধান। চাষিরা বলছেন, উঁচু জমিতে চাষ করা এই ফসলে সার ও সেচ প্রায় ৩০ শতাংশ কম লেগেছে। এছাড়া চাষ করার ১১৫ দিন পরেই ঘরে তুলতে পারছেন তারা। একইসঙ্গে প্রতি একর জমিতে উৎপাদন হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ মণ ধান। যা কৃষকদের কাছ থেকে বীজ হিসেবে ক্রয় করছে বিনা।
একজন কৃষক বলেন, 'এই ধান চাষ করে আমি লাভবান। কারণ অল্প টাকার এতো বেশি ফলন আমরা আগে কখনো কল্পনাও করিনি। বিঘাপ্রতি আমরা ৩০ থেকে ৩২ মণ ধান পাচ্ছি। খরচ অন্যন্য ধানের থেকে তিন ভাগের এক ভাগ বাচে। সার কম লাগে।'
সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানিরা বলছেন, যৌথ গবেষণায় অনেকগুলো বৈশিষ্ট্যের সমন্বয়ে বিনা ধান-১৭ উদ্ভাবন করা হয়েছে। এটি স্বল্পমেয়াদী জাতের হওয়ায় ধান কাটার পর একই জমিতে রবি শস্য হিসেবে চাষ করা যায় সরিষা, মসুর ডাল, আলু। এতে বাড়তি ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি আয় বাড়বে কৃষকদের।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (মৃত্তিকা) ড. মো. মাহবুবুল আলম তরফদার বলেন, 'ধান অনেক সুন্দর হয়েছে, ভালো ফলন হয়েছে। একইভাবে আমাদের এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৭০০ টন বীজ ক্রয় করবো এবং এগুলো কৃষকদের মাধে বিন্মূল্যে বিতরণের উদ্যোগ রয়েছে।'
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. বাবুল আকতার বলেন, 'কৃষক ভাইরা আসলেই ভালো ফলন পাচ্ছে। আর্থিক উন্নয়নের জন্য এই বিন্ ধান ১৭ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।'
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'এটা পানি কম লাগে, সার কম লাগে কিন্তু ফলন দেয় অত্যন্ত বেশি।'
নতুন এই ধানের জাত ক্ষরাসহিঞ্চু হওয়ায় খুলনা-যশোর-সাতক্ষীরা অঞ্চলের উচু ও মাঝারি উচু জমিতে এই ধানের চাষ সম্ভব বলছেন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা।