ময়মনসিংহে বেগুন গাছে টমেটো ফলালেন কৃষক শহিদুল্লাহ

গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ
গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ | ছবি: এখন টিভি
0

বেগুন গাছে টমেটো। বাস্তবে এমনটিই সম্ভব করেছেন ময়মনসিংহের গৌরীপুরের তাঁতকুড়া গ্রামের কৃষক মো. শহিদুল্লাহ। জংলি বেগুনের কাণ্ডে টমেটোর চারা গ্রাফটিং করে পেয়েছেন শতভাগ সফলতা। বিষমুক্ত এ টমেটোর চাহিদা ও দাম দুটোই বেশি। গ্রীষ্মকালীন টমেটোর আবাদ বাড়াতে গ্রাফটিং পদ্ধতি কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে উদ্যোগ নেয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

জঙ্গল বা পথের ধারে বা ক্ষেতের আইলে কম বেশি চোখে পড়ে তিত বেগুন বা জংলি বেগুন গাছের। কাটাযুক্ত এ বেগুন গাছের কাণ্ড শক্ত হওয়ায় পানির নীচে ডুবে থাকলেও পচন ধরে না। এর শক্ত কাণ্ডে টমেটোর চারা গ্রাফটিং করে রোধ করা সম্ভব গ্রীষ্মকালীন টমেটোর কাণ্ড পচা রোগ।

চলতি মৌসুমে জংলি বেগুন গাছের শক্ত কাণ্ডে বারি টমেটো ৮ জাতের টমেটোর চারা গ্রাফটিং করে প্রায় শতভাগ সফলতা পেয়েছেন ময়মনসিংহের গৌরীপুরের তাঁতকুড়া গ্রামের কৃষক মো. শহিদুল্লাহ। তার ক্ষেতের গাছে গাছে ঝুলছে কাঁচাপাকা টমেটো। ফলনও হয়েছে ভালো এমনকি নেই রোগ বালাইয়ের প্রাদুর্ভাব।

বাড়ির পাশের দশ শতাংশ জমিতে পলিনেট হাউজের ভেতর মাত্র ১৮ হাজার টাকা খরচ করে প্রথমবারেই টমেটো বিক্রি করেছেন অন্তত ৭০ হাজার টাকার। শহিদুল্লাহর পরিবারের অন্য সদস্যরাও রপ্ত করেছেন গ্রাফটিংয়ের কাজ।

আরও পড়ুন:

কৃষক মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ‘গ্রাফটিং পদ্ধতিতে চাষ করার ফলে রোগ বালাইয়ের প্রাদুর্ভাব কমেছে। আমার একটি চারাও এখন পর্যন্ত মারা যায়নি।’

মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তার বলছেন, গ্রাফটিংয়ে গাছের রোগবালাই হয় না বললেই চলে।এছাড়া পলিনেট হাউজের বাইরেও কৃষক পর্যায়ে টমেটোর আবাদের এ পদ্ধতি ছড়িয়ে দিতে কাজ চলছে।

ময়মনসিংহ গৌরীপুর উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র সরকার বলেন, ‘আমরা স্থানীয় পদ্ধতিতে ওপরে একটি শেড দিয়ে দেই। সাধারণত এটি বাহিরেও চাষ করা যায়। এ পদ্ধতিতে আবাদের মাধ্যমে শতভাগ সফলতা পাওয়া যায়।’

ময়মনসিংহ গৌরীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন জলি বলেন, ‘গ্রীষ্মকালীন এ টমেটো চাষ দেখে অনেক কৃষক অনুপ্রেরণা পাচ্ছে। সামনের বছর এ ফলন আরও বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি আমরাও তাদের পরামর্শ দিয়ে সাহায্যে করবো।’

গ্রীষ্মকালে ঢলে পড়া রোগ প্রতিরোধে টমেটো আবাদের কার্যকর পদ্ধতি হলো গ্রাফটিং বা কাটিং কলম। এ পদ্ধতি কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে এগিয়ে আসার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের।

ময়মনসিংহ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় উদ্যানতত্ত্ব বিভাগ বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘সার্বিক সহায়তা, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও চারা উত্তোলনের মাধ্যমে প্রথমত কৃষকদের বিতরণ করতে হবে।’

দেশে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাহিদা রয়েছে প্রায় দুই লাখ মেট্রিক টন। আর বর্তমানে উৎপাদন হয় মাত্র ৭০-৮০ হাজার মেট্রিক টন।

এফএস