চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা প্রকল্পে দুর্নীতি: সিটি মেয়র ও সিডিএর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

এখন জনপদে
0

চট্টগ্রামে ৮ হাজার কোটি টাকার জলাবদ্ধতা প্রকল্পে বিপুল দুর্নীতি-অনিয়ম ও লুটপাট হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান। শুধু তাই নয়; বহদ্দারহাটে বাড়ই পাড়া খাল খননের সময় জমি অধিগ্রহণে স্বজনপ্রীতির কারণে খালের গতিপথ পাল্টে গেছে বলে মন্তব্য করেন সিটি মেয়র। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সিডিএ পাল্টা অভিযোগ এনে বলছে, সিটি করপোরেশনের গাফিলতিই নগরীতে জলাবদ্ধতার জন্য দায়ী। এজন্য তাদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর এলাকায় জামেয়া সুন্নিয়া খাল। দেখে বোঝা যায়, এ খালে নিকট অতীতে আবর্জনা পরিষ্কার করেনি কোনো সংস্থা। ভ্যান, ফ্রিজসহ ময়লার পাহাড়ে ঢাকা পড়েছে খাল। নগরীর ৫৭টি খালের মধ্যে এমন চিত্র অন্তত ২১টি খালের। বাকী ৩৬টি খালে জলাবদ্ধতা চললেও, এসব খাল রয়ে গেছে প্রকল্পের বাইরে।

সকালে এসব খালের চলমান কার্যক্রম পরিদর্শনে আসেন শিল্প উপদেষ্টা, মেয়র, বিভাগীয় কমিশনারসহ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা। শিল্প উপদেষ্টা বলেন, বিগত সরকারের সময় প্রকল্পে অনিয়ম, অর্থ লুটপাট আর দুর্নীতি হয়েছে। ছিল না প্রকল্পে যথাযথ সমন্বয়ও। ফলে কয়েক বছর প্রকল্প চললেও সুফল পায়নি মানুষ।

শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান বলেন, ‘ব্যাপক লুটপাটের শিকার হয়েছিল তাই জনগণের কাজগুলো করা হয়নি। খাল বন্ধ করে দিয়ে জায়গা দখল মাটি ময়লা আবর্জনা সব সরাতে যে কাজটা সেটা শুরু হয়েছে। এবারের বর্ষায় আমরা যতদূর পানি কমিয়ে আনতে পারি সে চেষ্টায় করা হবে।’

এ সময় সিটি মেয়র বলেন, দখল দূষণে নগরীতে হারিয়ে যাওয়া ২১টি খাল নতুন করে উদ্ধারে নেমেছে করপোরেশন। এ জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। পাওয়া গেছে মাত্র ১০ কোটি টাকা। মেয়র অভিযোগ করেন, বহদ্দারহাটে বাড়ই পাড়া খাল খনের সময় জমি অধিগ্রহণে স্বজনপ্রীতি হয়েছে, এতে খালের গতিপথ পাল্টে গেছে ।

চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ কারো কারো জমি রক্ষার জন্য আঁকাবাঁকা করে ফেলেছে কাজেই এই যে একটা দুর্নীতি ও স্বজন প্রীতি এমন চিন্তা ভাবনা থেকে আমাদেরকে বেড়িয়ে আসতে হবে।’

অভিযোগের জবাবে সিডিএ বলছে, জলাবদ্ধতার জন্য প্রধান দায়ী সিটি কর্পোরেশন। তারা আবর্জনা পরিষ্কার, খাল খননে ব্যর্থ হয়ে দোষ চাপাচ্ছে। এজন্য তাদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

সিডিএ প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামস বলেন, ‘ নালা ড্রেনের কাজ আমাদের না এটা মূলত সিটি করপোরেশনের কাজ। আমরা ৩৬ টা খাল নিয়ে করছি আপনি যদি একটা খালও করতে না পারেন। একটাই যদি ১০-১৫ বছর ফেলে রাখেন তাহলে বাকি ২১ টা খাল কীভাবে করবেন। আমি মনে এটা যোগ্যতা ও অদক্ষতার প্রশ্ন। যোগ্যতা ছিল না বলে তারা এই কাজটি বিলম্ব করেছে।’

প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় চলমান কাজ মনিটরিং এ সম্প্রতি চার উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তারই অংশ হিসাবে এরই মধ্যে চার উপদেষ্টা খাল পরির্দশন ও মনিটরিং শুরু করেছেন।

এএম