হকার আমির আলীর কণ্ঠে ক্ষোভ। কারণ ফুটপাতে ৫০ ইঞ্চি জায়গার জন্য বছরে গুণতে হবে দেড় লাখ টাকা।
আমির আলী বলেন, ‘আগে ৫০ টাকা দিয়েছি, বড়জোর এখন ১০০ টাকা দিতে পারবো। এর অতিরিক্ত টাকা দিতে পারবো না। এই বায়তুল মোকাররমে আছি ৩৫ বছর ধরে। এইরকম লোক অনেক এসেছে কিন্তু এমন অত্যাচার আগে কখনো হয় নাই।’
প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে বন্ধ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকরারমের পশ্চিমে লিংকরোডের এই ফুটপাতের দোকানগুলো। চাঁদা নিয়ে দু’পক্ষের সমঝোতা না হওয়ায় রোববার (২ মার্চ) পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় স্থানীয় হকাররা।
২ মাস আগে জিপিও ভবনের সামনের সড়কটি ৪৮টি গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য ইজারা দেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এতে গাড়ি পার্কিং ব্যতিত হকার কিংবা অন্য কোনো ব্যবসা না করতে শর্ত জুড়ে দেয়া হয়।
তবে এখানে ফুটপাতই যেন বাজার। তাই অনেক আগেই গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত জিপিও ফটক পেরিয়ে আরো কিছু দুরে দাগ দেয় সিটি করপোরেশন। যে লাইনে ব্যবসা করেন ৫০ জন হকার। সেখানে এবার হকাররা বসতে গেলে বাধে বিপত্তি।
চাঁদার হার বাড়িয়ে দেয় নতুন ইজারাদার। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ২০ ফেব্রুয়ারি দলবল নিয়ে ভাঙচুর করেন ইজারাদার শাহ জালাল বাদল। ১০ দিন বন্ধ থাকার পর গত শনিবার রাতে সমঝোতার জন্য মহানগর দক্ষিণের শ্রমিক দলের নেতা মুন্সী বদরুল আলম সবুজের কাছে যায় হকাররা।
হকারদের একজন বলেন, ‘১০ দিন বন্ধ থাকার পর আমরা সিটি করপোরেশনের কাছে যায় তারাও তাদের পক্ষ নেয়। সেখান থেকে বলা হয় সমঝোতায় যেতে। যার মানে চাঁদা দিতে হবে। প্রশাসনও একই কথা বলে।’
তবে চাঁদা নয়, সমঝোতার জন্য সবুজের সাথে দেখা করার দাবি করেন আরেক হকার।
হকারদের আরেকজন বলেন, ‘আমরা তার কাছে গিয়েছি, সমঝোতা করে আমাদের দোকান বসায় দেয়া হোক। যে ইজারা নিয়েছে সে আসলে এইটার সমাধান হবে।’
গণমাধ্যমে কথা বলার সময় পাশ থেকে বিরোধিতা করেন অন্যরা। এমন সময় ঘটনাস্থলে আসেন শ্রমিক দল নেতা সবুজ। সঙ্গে দলীয় কর্মীরা। অভিযোগ অস্বীকার করেন মহানগর শ্রমিক দলের এই নেতা।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের সদস্য সচিব মুন্সী বদরুল আলম সবুজ বলেন, 'আওয়ামী লীগের যারা দোসর আছে, তারা বিভিন্ন জায়গায় অঘটন ঘটিয়ে আমাদের নাম বলে। সৎ সাহস আছে, আমাদের বিরুদ্ধে কেউ যদি অপপ্রচার করে আমরা সেখানে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করি।'
এদিকে সড়কে দাগ দেয়া এবং হকার বসানোর বিষয়ে জানতে চাইলে বারবার চেষ্টা করেও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা কাইজার মো. ফারাবীকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি। তবে দক্ষিণ সিটির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘সমাধানের জন্য সম্পত্তি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’