বাণিজ্য-বিনিয়োগে ভঙ্গুর দশা, আওয়ামী মদদপুষ্ট সংগঠনগুলোকেই দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা
কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী শাসনামলের পুরো ১৫ বছরে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ছিল গোষ্ঠিতান্ত্রিকতার কবলে। একচেটিয়া সুবিধা পায় বেক্সিমকো, এস আলমসহ আওয়ামী লীগের আত্মীয়স্বজন। রিজার্ভ চুরি কিংবা শেয়ারবাজার লুটের মাঝেই চলছিল রপ্তানি হিসাবের গড়মিল। ১৫ বছরের এসব অনিয়মে যখন পুরো দেশ হাবুডুবু খাচ্ছে তখন শুধু পাচার হয় ২৮ লাখ কোটি টাকা। এর জন্য ব্যবসায়ীদের রাজনৈতিক বলয়ে থাকা বাণিজ্যিক সংগঠনগুলোর মুখে কুলুপ দেয়াকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। আর সংস্কারের মাধ্যমে এসব অনিয়ম বন্ধ করা না গেলে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ঠিক হবে না বলে সতর্ক করছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থ ছাড়ের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে আইএমএফের দীর্ঘ বৈঠক
ঋণের শর্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও চতুর্থ কিস্তির ৪.৭৩ বিলিয়ন ডলার অর্থ ছাড়ের বিষয়ে আলোচনা করতে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) একটি মিশন আজ (মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর) ঢাকায় এসেছেন। আর প্রথম দিনই সকাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে দীর্ঘ বৈঠক করে সংস্থাটির প্রতিনিধি দল।
অপরিকল্পিত অবকাঠামো উন্নয়নে ১৫ বছরে তলানিতে অর্থনীতি
হাট বাজারের খরচে হিমশিম খাচ্ছেন স্বল্প ও সাধারণ আয়ের মানুষ। গত ১৫ বছরে আয় যে পরিমাণ না বেড়েছে তার চেয়ে খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ। আর এর প্রধান কারণ হিসেবে অপরিকল্পিত অবকাঠামো উন্নয়নকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা। শুধু সামষ্টিক অর্থনীতি নয়, আওয়ামী সরকারের আমলে সুবিধাভোগী সিদ্ধান্তে ব্যাংক ও শেয়ারবাজারের তারল্য এবং আস্থাও তলানিতে নেমেছে বলে জানিয়েছেন তারা।
খেলাপি ঋণের সব তথ্য সামনে আনলে ভয়াবহ তথ্য মিলবে!
দেশের ব্যাংকখাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা বিপুল অঙ্কের ঋণ খেলাপি। যা ১৫ বছরে বেড়েছে দুই লাখ ৬২ হাজার ৪৯৬ কোটি টাকা। আর গেল সেপ্টেম্বর শেষে বিতরণ হওয়া মোট ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৮২১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ঋণের মধ্যে ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশই খেলাপি। দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এই খেলাপি ঋণ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বেড়েছে বেপরোয়া গতিতে। ব্যাংকাররা বলছেন, খেলাপি ঋণের তথ্য যেভাবে গোপন করা হয়েছে তা যদি পুরোপুরি সামনে আনা হয় তাহলে আরও ভয়াবহ তথ্য মিলবে।
তিন শীর্ষ ঋণ গ্রহীতা অর্থ ফেরত না দিলে মূলধন হারাবে ১০ ব্যাংক
শুধুমাত্র উৎপাদন শিল্পেই ঋণ প্রায় সাড়ে ৭ লাখ কোটি টাকার বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, আর মাত্র তিন শতাংশ বাড়লেই পাঁচটি ব্যাংক তাদের সিআরএআর সংরক্ষণে ব্যর্থ হবে। এমনকি তিন শীর্ষ ঋণ গ্রহীতা অর্থ ফেরত না দিলে ১০টি ব্যাংক হারাবে তাদের মূলধন। নাম না প্রকাশের শর্তে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, 'রাইট অফ' এ যেতে পারছে না ব্যাংকগুলো।
বাজেটের পাশাপাশি বড় প্রকল্প ও জ্বালানি খাতে সহায়তার আশ্বাস বিশ্বব্যাংকের
চলতি অর্থবছরের জন্য ২ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তার পাশাপাশি বড় প্রকল্প ও জ্বালানি খাতে সহায়তা করবে বিশ্বব্যাংক। আজ (বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সচিবালয়ে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে এ কথা জানান বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইসার।
মূল্যস্ফীতির সাথে বেড়েছে মাথাপিছু ঋণ, চাপও বেড়েছে সাধারণ মানুষের
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার তার ১৫ বছরের শাসনামলে ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ রেখে যায়। শেখ হাসিনা সরকার দেশ এবং বিদেশে থেকে ঋণের বড় একটি অংশ নিয়েছে দেশের ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে। ফলে মূল্যস্ফীতি বাড়ার সাথে বেড়েছে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ। রাষ্ট্রীয় এই ঋণের চাপ বয়ে বেড়াচ্ছে সাধারণ মানুষ।
অর্থপাচারকারীদের আর কোনো প্রশ্রয় দেয়া যাবে না: বিএবি চেয়ারম্যান
ব্যাংক খাতের সংস্কার ও পুনর্গঠনে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। আজ (বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএবির চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার জানান, অর্থপাচারকারীদের আর কোন প্রশ্রয় দেয়া যাবে না, তারা যেন ফিরতে না পারে সে ব্যবস্থাও নেয়া হবে। এদিকে আজ কাজে যোগ দিয়ে এফবিসিসিআই নতুন প্রশাসক হাফিজুর রহমান বলেছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের পাশাপাশি সংগঠনের সংস্কারও করবেন তিনি।
চলতি অর্থবছরে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ১২ শতাংশ: অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা
স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি আর অনিয়ম সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকার গেল ১ মাসে যেসব উদ্যোগ নিয়েছে তাতে আর্থিক খাতের পরিবর্তন অনেকটাই দৃশ্যমান। এস আলম মুক্ত ব্যাংক খাত থেকে শুরু করে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বাড়বে রপ্তানি আয়। অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সার্বিক বিবেচনায় চলতি অর্থবছরে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ১২ শতাংশ ধরা হয়েছে।
ব্যাংকখাত পুনর্গঠনে দু'তিন বছর সময় লাগবে: গভর্নর
নতুন টাকা ছাপানো হবে না বরং আমানতকারীদের স্বার্থে ব্যাংকগুলোর মধ্যে লেনদেনের মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংকে সহায়তা করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। একইসাথে ব্যাংকের আমানতকারীদের শঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি। অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরতে সময় কম লাগবে। তবে, ব্যাংক খাত পুনর্গঠনে দু'তিন বছর সময় দরকার বলে জানান গভর্নর।
১৫ বছরের ঋণের বোঝা আর মূল্যস্ফীতির চাপে দিশাহারা মানুষ
গত ১৫ বছরে দেশি-বিদেশি ঋণ নিয়ে দেশের অর্থনীতির অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। তবে অভিযোগ উঠেছে এমন উন্নয়নে যে ব্যয় দেখানো হয়েছিল তার বেশিরভাগই হয়েছে আত্মসাৎ ও পাচার। ফলে একদিকে যেমন বেড়েছে ঋণের বোঝা অন্যদিকে মূল্যস্ফীতির চাপে নাজেহাল হয়েছে সাধারণ মানুষ। এমন অবস্থায় অর্থনীতি সংস্কারে কাজ শুরু করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যেখানে মূল্যস্ফীতিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে দায়িত্ব নিতে হবে সংসদকে
এবারও ঘাটতি বাজেট পূরণে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার টার্গেট চেপেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাঁধে। খেলাপি ঋণ আর তারল্য ঘাটতিতে দুর্বল ব্যাংক। বাজেটের আগে আর্থিক খাতের এমন পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকরা বলছেন, এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ ও ব্যাংক খাতের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নিতে হবে সংসদকে। কর কৌশলে ন্যায্যতা সৃষ্টির সাথে নিশ্চিত করতে হবে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সুশাসন।