চলতি বছরের জুনে চরম তাপমাত্রার কবলে ছিল সৌদি আরব থেকে গ্রিস পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ। যা অন্য যেকোনো জুন মাসের তুলনায় বেশি।

টানা ১২ মাস ধরে বিশ্বজুড়ে ভেঙেছে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। গবেষণা সংস্থাগুলো বলছে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে চলতি বছর আর্থিক ক্ষতি ছাড়িয়েছে ৪ হাজার ১শ' কোটি ডলার। তাপমাত্রা বৃদ্ধির লাগাম টেনে না ধরতে পারলে ২০৪৯ সাল নাগাদ প্রতিবছর বৈশ্বিক আয় কমতে পারে গড়ে ৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত।

জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রাভাবে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ায় মরে সাদা হয়ে যাচ্ছে সমুদ্রে থাকা নানা রঙের প্রবাল প্রাচীর। যার কারণে হুমকিতে পড়ছে সমুদ্র থেকে মৎস্যসম্পদ আহরণ করা মানুষের জীবন-জীবিকায়। ইতোমধ্যে থাইল্যান্ডের চান্থাবুরি প্রদেশের মৎস্যজীবীদের আয়ে লেগেছে ভাটার টান। এভাবে চলতে থাকলে সামুদ্রিক খাদ্য পণ্যের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে বলে শঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

তাপমাত্রার পারদ ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি পৌঁছেছে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে জারি করা হয়েছে 'রেড অ্যালার্ট'। চরম বৈরী আবহাওয়ায় বন্ধ রয়েছে সরকারি-বেসরকারি সব স্কুল। শিগগিরই দাবদাহের আঁচ থেকে বাঁচার লক্ষণ দেখছে না ভারতবাসী। তীব্র গরমে দেশজুড়ে অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদা।

এল নিনো প্রভাবে তীব্র দাবদাহের কবলে পড়েছে পৃথিবীর দক্ষিণ আর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো। আন্তর্জাতিক পরিবেশ ফোরামের প্রতিবেদন বলছে, আগামী ৩ দশকে এই তাপদাহ স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি বিশ্বে তৈরি করবে চরম অর্থনৈতিক ঝুঁকি। কার্বন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে না আনলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ২৫ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী বৃহস্পতিবার (২ মে) থেকে সারাদেশে না হয়ে অঞ্চলেভেদে জারি করা হচ্ছে নতুন হিট অ্যালার্ট। রোববার থেকে জারি করা তিন দিনের ( ৭২ ঘণ্টার ) চতুর্থ দফার হিট অ্যালার্ট শেষ হচ্ছে আগামীকাল। এর পরই অঞ্চলভেদে জারি হবে তাপপ্রবাহের নতুন সতর্কতা।

আগামী সোমবার (২২ এপ্রিল) শুরু হচ্ছে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা-ন্যাপ এক্সপো ২০২৪। বুধবার (১৭ এপ্রিল) এক্সপোটির বিস্তারিত তুলে ধরতে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।

সারাদেশে আজ দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।

আজ (শনিবার, ৬ এপ্রিল) চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এরপরই রাজশাহীতে রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

রিও ডি জেনেরিওতে রোববার (১৭ মার্চ) সকালে তাপমাত্রার পারদ ছাড়িয়ে যায় ৬২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। দাবদাহের তীব্রতা থেকে বাঁচতে সমুদ্র সৈকত আর সুইমিং পুলে ছুটে যাচ্ছেন শহরের বাসিন্দারা। শরীর সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত পান বা গোসলের পানি পাচ্ছেন না অনেকে।