গায়ে আকাশী নীল শার্ট, বুকে চশমা রাখা। চলনে বলনে টিপটপ এই নিপাট ভদ্রলোকের নাম মোহাম্মদ কামাল হোসেন ওহিদুল। ৪ মাস আগেও যিনি ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অফিস সহকারী। তবে গেল নভেম্বরে পদোন্নতি পেয়ে বদলে গেছে কামালের পরিচয়। পিওন থেকে এক লাফে এখন তিনি অ্যাডমিন অফিসার।
একজন সাধারণ অফিস সহকারী থেকে প্রশাসনের কর্তা, তথ্যটি পেয়ে চক্ষু চড়ক গাছ হওয়ার অবস্থা। আদৌ কি এমনটা সম্ভব? ঘটনার সত্যতা জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় সেই কামালের সাথে। অকপটে যিনি স্বীকার করেছেন এতদিন পিয়ন হিসেবে চাকরি করলেও এখন তার পরিচয় অ্যাডমিন অফিসার।
বিসিবির অ্যাডমিন অফিসার কামাল হোসেন ফোনকলে বলেন, ‘অনেক আগে পিয়ন ছিলাম। পাপন সাহেবরা কিছু লোক ঢুকিয়ে গেছেন, এরা তো কাজও ঠিক মতো করে না। খায়, ঘুরে দুনিয়ার টাকা বেতন করে গেছে। আমরা সকাল থেক রাত পর্যন্ত দুনিয়ার কাজ করি।’
গেল বছর বিসিবির এক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায় একজন টেকনিশিয়ান নিয়োগে প্রতিষ্ঠানটিতে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয় এসএসসি পাশ। তাহলে অষ্টম শ্রেণি পাস কামাল কিভাবে পদোন্নতি পেলেন অ্যাডমিন অফিসার পদে? এ বিষয়ে কামালকে প্রশ্ন করা হলে, এড়িয়ে যান তিনি।
কামাল হোসেন বলেন, ‘আমার থেকে খারাপ অবস্থা মল্লিক সাহেবরা করে গেছে। এগুলো আপনারা জানেন না।’
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করা হয় ক্রিকেট বোর্ডের অ্যাডমিন ম্যানেজার মেজর হাসিবুজ্জামানের সাথে। তবে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও কোনো সাড়া দেননি তিনি। উল্টো ব্লক করেছেন ফোন নম্বর।
এদিকে, এর আগে কামাল হোসেনের নামে শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী ধর্ষণ চেষ্টা মামলা করা হলে দীর্ঘ সময় কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি। তবে কামালের দাবি, তাকে ফাঁসাতেই আনা হয়েছিল এমন অভিযোগ।
বিসিবির অ্যাডমিন অফিসার বলেন, ‘আমার নামে কিসের অভিযোগ? এটা তো মিথ্যা মামলা ছিল। ওটা নাজেহাল করেছিল আমাকে।’
রঙ বদলে রঙ্গিন করি, এগিয়ে যাও বাংলাদেশ। এমন নানান স্লোগানে ঢেকে ফেলা হয়েছে মিরপুর শের এ বাংলা স্টেডিয়ামের দেয়াল। তবে দেয়ালে লেখা এসব নীতিকথা কতটা বুকে ধারণ করতে পেরেছে অভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন ক্রিকেট বোর্ড? পিওন থেকে অফিসার কান্ড- এই প্রশ্নটাই হয়তো জোরালো করবে।