দীর্ঘ প্রায় ১৯ বছরের অধ্যায়। অনেকটা আক্ষেপেই সমাপ্তি। বেশ কিছু রেকর্ড আর কীর্তিতে ভরপুর ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিম।
২০০৬ সালের আগস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেকের পর গত ১৯ বছরে দেশের হয়ে মোট ২৭৪ ওয়ানডে খেলেছেন মুশফিক। ৩৬.৪২ গড়ে ৯ সেঞ্চুরি ও ৪৯ ফিফটির কল্যাণে করেছেন ৭ হাজার ৭৯৫ রান। বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ৩৭টি ওয়ানডেতে।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনেক 'প্রথম' রেকর্ডের নায়ক মুশফিক। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ২৭৪ ম্যাচ খেলেছেন মুশফিক। আড়াইশ' ম্যাচ খেলতে পারেননি আর কেউ। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ১২৪ ম্যাচ জয়ের স্বাদও পেয়েছেন তিনি।
২০১০ সালের ১৫ জুলাই থেকে ২০১৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের হয়ে টানা ৯২ ওয়ানডে খেলার কীর্তি গড়েন মুশফিক। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডও মুশফিকের। ২০২৩ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেটে ১৪ চার ও ২ ছক্কায় ৬০ বলে করেন সেঞ্চুরি।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৭৯৫ রান করেছেন মুশফিক, সেঞ্চুরি ৯টি। সর্বোচ্চ রান তামিম ইকবালের ৮ হাজার ৩৫৭ ,সেঞ্চুরি ১৪টি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে বাংলাদেশের হয়ে ছক্কা মেরেছেন ঠিক ১০০টি। কিপার-ব্যাটার হিসেবে মুশফিক রান করেছেন ৭ হাজার ২৫৪। রানের হিসেবে তার ওপরে আছেন কেবল তিনজন কিপার।
ওয়ানডে ইতিহাসে উইকেট কিপার-ব্যাটার হিসেবে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার তালিকায় ২৬০ ম্যাচ খেলে ৫ নম্বরে মুশফিক। ৩৬০ ম্যাচ খেলে সবার ওপরে কুমার সাঙ্গাকারা, ৩৫০ ম্যাচ মাহেন্দ্র সিং ধোনির, মার্ক বাউচার খেলেছেন ২৯৪ ম্যাচ ও ২৮২ ম্যাচ খেলে ৪ নম্বরে অ্যাডাম গিলক্রিস্ট।
উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতে ২৪১ ক্যাচ নিয়েছেন মুশফিক, স্টাম্পিং করেছেন ৫৬টি। মোট ডিসমিসাল করেছেন ২৯৭টি যা বাংলাদেশের রেকর্ড। এক ওয়ানডেতে পাঁচ ক্যাচ নেয়া বাংলাদেশের একমাত্র কিপার মুশফিকই। এই কীর্তি তিনি গড়েছেন দুই দফায়। এক ম্যাচে পাঁচটি ডিসমিসাল একাধিকবার করা একমাত্র কিপারও তিনি।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সেরা জুটির অংশীদার মুশফিক। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে তার জুটিতে এসেছে ৩ হাজার ৫৪৫ রান। যা একমাত্র তিনহাজারের অধিক রানের জুটি। সবচেয়ে বেশি সাতটি শতরানের জুটিও আছে মুশফিক ও সাকিবের।
২০২২ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রামে লিটনের সাথে ২০২ রানের জুটি গড়েন মুশফিক যা তৃতীয় উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের সেরা।
২০২২ সালে টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলেছিলেন, ২০২৫ এ থামলেন ওয়ানডে থেকেও। তবে প্রজন্মের অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটারকে সাদা পোশাকে দেখা যাবে আরও কিছুদিন। এই সময়ে রেকর্ডবুককে আরও সমৃদ্ধ করবেন এমনটাই প্রত্যাশা ভক্ত সমর্থকদের।