শুরু থেকেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের একাদশ আসরকে বলা হয়েছে অন্যরকম। ট্রফি উন্মোচন থেকে শুরু করে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, সব কিছুতেই ছিল নতুনত্বের ছাপ। তবে মাঠের ক্রিকেট শুরুর পরেই গুবলেট পেকেছে। যার শুরুটা ছিল টিকেটিং অব্যবস্থাপনা।
৩০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া টিকেটিং অসন্তোষ ছিল ফাইনালের দিন পর্যন্ত। বুথ ভাঙচুর থেকে শুরু করে ফাইনালের দিনে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করার মতো ঘটনাও ঘটেছে। প্রথমবার অনলাইন টিকেটিংয়ের ব্যবস্থা করলেও তা দিয়ে দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে কমই। চট্টগ্রাম ও সিলেটে টিকিট নিয়ে ক্ষোভ কম থাকলেও টুর্নামেন্টজুড়ে কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ ছিল।
প্রথম আসর থেকেই পারিশ্রমিক নিয়ে টালবাহানার কালিমা লেপ্টে আছে টুর্নামেন্টটির সাথে। তবে একাদশ আসর ছাড়িয়ে গেছে আগের সবগুলোকে। যার নেপথ্যে দুর্বার রাজশাহী। দলটির ক্রিকেটাররা পারিশ্রমিকের দাবিতে বয়কট করেন অনুশীলন। এমনকি একসঙ্গে সব বিদেশি ক্রিকেটার বয়কট করেন ম্যাচ।
নিয়ম ভেঙে কেবল দেশিদের নিয়েই ম্যাচ খেলতে বাধ্য হয় দলটি। এছাড়া পারিশ্রমিক ইস্যুতে বিসিবি বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন লঙ্কান ক্রিকেটার লাহিরু সামারাকুন। হোটেলের বিল বকেয়া থেকে শুরু করে টিম বাসের ড্রাইভারের খেলোয়াড়দের লাগেজ আটকে রাখার লজ্জাজনক ঘটনাও ঘটেছে দলটির বদৌলতে।
পারিশ্রমিক ইস্যুতে কেবল রাজশাহীই নয়, গণমাধ্যমে এসেছে আরো কয়েকটি দলের নামও।
এবারের আসরে সব ছাপিয়ে গেছে ফিক্সিংয়ের দুর্গন্ধ। টুর্নামেন্টের ৮টি ম্যাচ আছে এন্টি করাপশন ইউনিটের অতশী কাঁচের নিচে। এছাড়াও দশজন দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারও আছেন সন্দেহের তালিকায়।
টুর্নামেন্ট খেলতে আসা বিদেশি খেলোয়াড়দের মান নিয়েও আছে বিস্তর অভিযোগ। দেশে-বিদেশে অনেকে তো বিপিএলকে বলছেন 'বৃদ্ধ পুনর্বাসন লিগ'। এক সময় যে লিগে নিয়মিত খেলেছেন ক্রিস গেইস, সুনীল নারাইন, ডি ভিলিয়ার্স, শহীদ আফ্রিদির মতো তারকারা, এবারের বিপিএলে পুনর্বাসিত হয়েছেন ওশানে থমাস, মার্ক দেয়াল কিংবা মিগুয়েল কামিন্সরা।
অনেক হতাশার বিপিএলে স্বস্তি দিয়েছে মাঠের ক্রিকেট। টুর্নামেন্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ এগারোবার দুইশ' রান, কিংবা সাতশ'র বেশি ছক্কা-হাজারের বেশি চার সবই এসেছে এবারের আসরে।
বরাবর ব্যাটিং তালিকায় বিদেশিদের আধিপত্য ভেঙ্গে সেরার তালিকায় দেশিদের নাম, কিংবা তাসকিন-খালেদ-রানাদের দুর্ধর্ষ বোলিং সবই দেখেছে এবারের বিপিএল।