ক্রিকেট
এখন মাঠে
0

সিলেট স্টেডিয়ামের সৌন্দর্যে ১০ বছর খেটেও নিজের জীবন গোছানো হয়নি বাদলের

দশ বছর ধরে গ্রাউন্ডসম্যানের চাকরি করছেন তবু স্থায়ী হয়নি চাকরি। স্টেডিয়ামের রক্ষণাবেক্ষণ করেন কিন্তু নিজের পরিবারের দেখভাল করতে হিমশিম খেতে হয়, প্রতিনিয়ত পাড়ি দিতে হয় অনিশ্চয়তায় সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের খণ্ডকালীন মাঠকর্মীর চাকরি করা বাদল মিয়া জীবন যুদ্ধ।

সিলেটের সবুজে ঘেরা স্টেডিয়ামকে বলা হয় দেশের সবচেয়ে নয়নাভিরাম ক্রিকেট মাঠ। কিন্তু এই স্টেডিয়াম যারা প্রস্তুত করেন কিংবা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকেন তাদেরই একজনের জীবনে ঠিক এর উলটো চিত্র। সিলেটের সবুজ মাঠ যদি আপনাকে সৌন্দর্যে মোহিত করে তাহলে গ্রাউন্ডসম্যান বাদল মিয়ার জীবন যুদ্ধের গল্প নিদারুণ কষ্ট দিবে।

বছরের পর বছর কাজ করেও স্থায়ী হয়নি চাকরি। দিনের পর দিন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আশ্বাসেই রেখে গেছেন বিশ্বাস। তবে বিশ্বাসে আর সাধন মেলেনি, মিলেছে শূন্য।

গ্রাউন্ডসম্যান বাদল মিয়া বলেন, ‘ভেন্যু ম্যানেজার বারবার দিয়েছে আশ্বাস তবুও কাজ হয়নি। যাকেই পেয়েছি তাকেই বলেছি। মাশরাফি, তামিম ভাই সবাইকেই বলেছি। তবুও কাজের কাজ হয়নি।’

যমজ সন্তান, বাবা-মা আর ছোট বোনের দায়িত্ব বাদল মিয়ার কাঁধে। ম্যাচ না থাকলে তাই জীবিকার সন্ধানে বের হতে হয় রিকশা নিয়ে। অথচ বাদলের পরে কাজ শুরু করেও অনেকেরই স্থায়ী চাকরি হয়েছে। কিন্তু অজানা কারণে বাদলের ভাগ্যে জোটেনা সুখবর।

বাদল মিয়া বলেন, ‘অটো রিকশা চালাতে আমার কষ্ট হয়। সবাই যদি আমার দিকে লক্ষ্য দিতো তাহলে একটা চাকরি পেলে আমার জন্য ভালো হতো।’

টিনের ছাপরা ঘরে হয় ৭ জনের মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই। ভাড়া গুণতে হয় ৫ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে আয়ের চেয়ে ব্যয়ই বেশি। ছেলের মাথায় পাহাড়সম চাপ। বাবা-মায়ের কাছে এর চেয়ে যন্ত্রণার আর কি হতে পারে?

বাদলের মা বলেন, ‘আমার পরিবারের সবাইকে সে চালায়, আমাদের চালায়। ওর জন্য চাপ হয়ে যায়। এইটা অনেক কষ্টের।’

সংসার সাগরে দুঃখ তরঙ্গের খেলা, আশা তার একমাত্র ভেলা- অথচ ১৪ থেকে ২৪ দশ বছর চাকরি করেও বাদল মিয়ার আশা বাস্তবতার রূপ দেখেনি। তবুও বিসিবির কাছে তার দাবি চাকরি স্থায়ীকরণ করে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলার সুযোগ যেন তাদের করে দেয়া হয়।

ইএ