২৪ সেপ্টেম্বর ১৮৪৪ সালে ম্যানহাটনে ক্রিকেটের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। সে ম্যাচের দুই দল ছিল কানাডা আর যুক্তরাষ্ট্র। সে সময় খেলাটির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের আগ্রহ দিনদিন বাড়ছিল। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন আর্থিক সংকটের সময়ে ব্যয়বহুল ক্রিকেট ছেড়ে বেসবল হয়ে ওঠে জনগনের প্রিয় খেলা। ক্রিকেট ব্রিটিশদের উদ্ভাবিত খেলা হওয়ায় এর প্রতি মার্কিন জনগনের বিরূপ প্রতিক্রিয়াও দেখা যায়। ফলে আস্তে আস্তে দেশটি থেকে ক্রিকেট অনেকটাই হারিয়ে যায়।
তবে একবিংশ শতাব্দীতে যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেট পুনরায় জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে। এর অন্যতম কারণ, দক্ষিণ এশিয়ার মানুষজনের যুক্তরাষ্ট্রে বসতি স্থাপন। ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মতো ক্রিকেট পাগল জাতিগুলো আমেরিকার মাটিতে ক্রিকেটের প্রতি আবারও আগ্রহ জন্মাতে সাহায্য করে।
তাইতো যুক্তরাষ্ট্রের স্কোয়াডভর্তি ভারত, পাকিস্তানের ক্রিকেটার। সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, জ্যামাইকা, বারবাডোজ, কানাডা, কোন দেশের ক্রিকেটার নেই এই দলে। ১৫ জনের স্কোয়াডে সবচেয়ে বেশি ক্রিকেটার আছেন ভারতের। মোট আটজন ভারতীয় বংশদ্ভূত ক্রিকেটার আছেন এই স্কোয়াডে, যাদের পাঁচজনের জন্ম ভারতে। পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকার আছেন দুইজন করে। বারবাডোজ, জ্যামাইকা ও কানাডার আছেন একজন করে।
বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ক্রিকেটারদের নিয়ে পরিকল্পনা সাজাতে ব্যস্ত হয়ে ওঠে দলটি। দেশটিতে গড়ে ওঠে শক্ত ক্রিকেট কাঠামো। মাইনর লিগের পাশাপাশি দেশটিতে চালু হয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের আসর মেজর লিগ ক্রিকেট। এগিয়ে যেতে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট।
বিশ্বকাপ শুরুর আগেই ক্রিকেট দুনিয়াকে একটা বার্তা দিয়ে রাখে তারা। দুটি সিরিজের প্রথমটিতে কানাডাকে ৪-০ ব্যবধানে হারানোর পর আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশ বাংলাদেশের বিপক্ষেও ২-১ ব্যবধানে জিতে নেয় তারা।
অ্যারন জোন্স, আন্দ্রে গাউসরা পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন বিশ্বকাপেও। প্রথম ম্যাচে রীতিমতো উড়িয়েই দেন প্রতিবেশি কানাডাকে। দ্বিতীয় ম্যাচে এশিয়ান জায়ান্ট পাকিস্তানের বিপক্ষেও দাপট দেখিয়ে সুপার ওভারে জয় তুলে নেয় তারা। তৃতীয় ম্যাচে ভারতের কাছে হারলেও সব শঙ্কা উড়িয়ে 'এ' গ্রুপ থেকে ভারতের সঙ্গী হয়ে বিশ্বকাপের সুপার এইটের টিকিট কাটে গোটা বিশ্ব রাজনীতির মোড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
আর এরই সাথে রচিত হয় ক্রিকেটে মার্কিন রূপকথা।