ক্রিকেট
এখন মাঠে

অযত্ন-অবহেলায় ধুঁকছে গোপালগঞ্জের শেখ কামাল স্টেডিয়াম

গোপালগঞ্জ শহরের প্রাণ কেন্দ্রে শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের করুণ দশা। অযত্ন আর অবহেলায় ধুঁকছে আর্ন্তজাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি। দীর্ঘদিন হলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই মাঠ। ক্রিকেট খেলাকে এগিয়ে নিতে স্টেডিয়ামটি ব্যবহার করে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার দাবি ক্রিকেটপ্রেমীদের।

আর্ন্তজাতিক মানের বিশাল প্লে-গ্রাউন্ড, ক্রিকেট পিচ, ইলেক্ট্রনিক স্কোরবোর্ড, সাড়ে ১২ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার ছাদযুক্ত গ্যালারি, চারটি ফ্লাড লাইট, ২০০ আসনের আধুনিক প্রেসবক্স, গাড়ি পার্কিং ও আউটার স্টেডিয়ামসহ আরও সব ব্যবস্থা রয়েছে। অথচ পরিকল্পনাহীনতার কারণে অব্যবহৃত থাকছে শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম।

উড়ে গেছে গ্যালারির ছাদ, ভেঙে গেছে বসার চেয়ার, মূল্যবান এয়ার কন্ডিশন পড়ে আছে। মরিচা পড়ে নষ্ট হচ্ছে সাইড স্ক্রিন, রোলার মেশিন, ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বেড়িয়ে আছে ইলেক্ট্রিক ক্যাবল।

প্রেসবক্সের কাঁচ খসে পড়ার পাশাপাশি ভবনের দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকতে থাকতে স্টেডিয়ামটির বেহাল দশা। বছরের পর বছরের স্টেডিয়ামটির এমন বেহাল দশায় ক্ষুব্ধ খেলোয়াড় ও ক্রীড়া সংগঠকরা।

খেলোয়াড়রা বলেন, 'মাঠ থেকে কোন লাভ আমরা দেখি না। কারণ এখানে কোন খেলা হয় না। পুরো স্টেডিয়ামটা অবহেলার কারণে নষ্ট হচ্ছে। খুব খারাপ অবস্থা।'

জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী নাঈম খান জিমি বলেন, 'আমরা খুব হতাশ। আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়ামে যদি আন্তর্জাতিক খেলা না হয় তাহলে স্বাভাবিকভাবেই ক্রীড়া সংশ্লিষ্টরা হতাশ হবে। তবে আমরা আশাবাদী খুব দ্রুতই এটা একটা ভালো অবস্থানে যাবে।'

স্টেডিয়ামের পাশে নির্মাণ হয় একটি আউটার স্টেডিয়াম। জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক খেলোয়াড়দের অনুশীলনের পাশাপাশি স্থানীয় খেলা আয়োজন হওয়ার কথা এই মাঠটিতে। কিন্তু সংস্কারের অভাবে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।

মাঠ দখল করে নির্মিত হয়েছে ঘরবাড়ি-দোকানপাট। ছবি: এখন টিভি

মাঠের বিশাল অংশ দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে ঘরবাড়ি আর দোকানপাট। ফলে স্থানীয় খেলায়াড়দের অনুশীলনের সুযোগ নেই। এতে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। প্রশাসনকে বারবার বলেও দখলমুক্ত না হওয়ায় অসহায় জেলা ক্রীড়া সংস্থা।

ক্রীড়া সংগঠক নজরুল ইসলাম নান্টু বলেন, 'আউটার স্টেডিয়ামটাতে করোনার সময় পৌরসভা মার্কেট করেছে। আমরা মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি দ্রুতবেগে স্থানান্তরের জন্য। নয়তো আমাদের খেলাধুলার উন্নয়ন ঘটবে না।'

অবকাঠামোগত সমস্যা আর খেলোয়াড়দের জন্য আর্ন্তজাতিক মানের আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় ভেন্যুটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না বলে জানান শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন। বলেন, 'খেলাধুলা পরিচালনার ক্ষেত্রে খেলোয়াড়দের আবাসনের একটা সমস্যা রয়েছে। এগুলো সমাধান করলে ভালো মানের খেলা উপহার দেয়া সম্ভব হবে।'

১৩ একর জমির ওপর ৪৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি নির্মাণের পর ২০১৩ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর