ক্রিকেট
এখন মাঠে
0

মুম্বাইয়ের বস্তিতে থেকে জাতীয় দলের ক্রিকেটার

বস্তিতে বেড়ে ওঠা ছেলে সরফরাজ খান এখন জাতীয় দলের সদস্য। অভিষেক ম্যাচেই গড়েছেন অনন্য কীর্তি। সরফরাজ যেন ভারতীয় সেই বিখ্যাত সিনেমা লাগানের পুনরাবৃত্তি। বাবা নওশাদ নিজেও ক্রিকেটার ছিলেন। তবে জাতীয় পর্যায়ের স্বপ্ন পূরণ না হওয়ায় সেই স্বপ্ন বুনেছেন তিন ছেলের মাঝে।

ক্রিকেটকে বলা হয় অভিজাতদের খেলা। একসময় ব্রিটিশ উচ্চবিত্ত বা জেন্টলম্যানস পদমর্যাদার লোকদের মাঝেই এই খেলার প্রচলন ছিল। যে কারণে এটিকে জেন্টলম্যানস গেম বলে পরিচয় করিয়ে দেয়া হতো। তাই তখন পর্যন্ত ব্যাটে বলের খেলাটি এক শ্রেণির মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।

কিন্তু নিশ্চয়ই মনে আছে ভারতের নির্মিত 'লাগান' সিনেমার কথা। ছবিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল কিভাবে ব্রিটিশদের থেকে ভারতীয়রা ক্রিকেট শিখেছে। এরপরই ক্রিকেট খেলা ছড়িয়ে পড়ে ভারতীয় উপমহাদেশসহ ব্রিটিশ কলোনিভুক্ত দেশগুলোতে। তারপরের গল্পটা সবারই জানা।

ভারতের জাতীয় দলে সদ্য সুযোগ পাওয়া সরফরাজ খানকে জড়িয়ে ধরে থাকা অবস্থায় বাবা নওশাদ খানের গায়ে জড়ানো জার্সির পেছনে লেখাটা সবার নজর কাড়ে। যেখানে 'জেন্টলম্যান নয়, ক্রিকেট সবার জন্য'। ইংল্যান্ডের সাথে ছেলের অভিষেকের দিনেই এই লেখাযুক্ত জার্সি পড়ার অর্থ নিশ্চয় ভালোভাবেই জানেন সরফরাজের বাবা। কারণ সরফরাজের বেড়ে ওঠাটা যে এক বস্তিতে।

নওশাদ খান চেয়েছিলেন ভারতের জাতীয় দলের হয়ে খেলতে। সেই স্বপ্ন পূরণ না হলেও তিন ছেলেকে বানিয়েছেন ক্রিকেটার। ট্রেনে শসা বিক্রি করে সংসার চালানো নওশাদের বড় ছেলে সরফরাজ খান। অভিষেক ম্যাচে দুই ইনিংসেই তুলে নেন ফিফটি। ভারতীয় ক্রিকেটে এমন কীর্তির মালিক সুনিল গাভাস্কার ছাড়াও আর মাত্র দুই ক্রিকেটার।

২৬ বছর বয়সী সরফরাজ জাতীয় দলে আসার আগেই নিয়মিত খেলতেন ভারতীয় ঘরোয়া ক্রিকেট। খেলেছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে। আয়ের অংকটা তাই ইতিমধ্যেই পার করেছেন কোটির ঘর।

অভিষেক টেস্টের নৈপুণ্যে সরফরাজ অনেকটাই নিশ্চিত পরের দুই ম্যাচের একাদশে জায়গা পাওয়ার জন্য। ভারতের শুধু টেস্ট স্কোয়াডে থেকেই এই ক্রিকেটার আয় করেছে সাড়ে সাত লাখ রুপি। আর টেস্ট ম্যাচ খেললে ১৫ লাখ রুপি ম্যাচ ফি পাওয়া যায়। অর্থাৎ সব ম্যাচ খেলতে পারলে শুধু ম্যাচ ফি থেকেই সরফরাজ পাবেন ৪৫ লাখ রুপি, সঙ্গে থাকছে স্পন্সরশিপের টাকা।

জীবনের প্রতিটি বাঁকে আগে থেকে কিছু ধারণা করাটা কঠিন। কিন্তু লক্ষ্য আর চেষ্টা যদি সঠিক থাকে তাহলে ছেড়া কাঁথায় শুয়ে সরফরাজদের স্বপ্ন দেখাটা বৃথা যায় না।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর