মহিষাসুরমর্দিনী দেবী দুর্গাকে বরণের পর মণ্ডপে মণ্ডপে পুরোহিতের মন্ত্র, ধূপ, পঞ্চপ্রদীপ, উলুধ্বনি আর ঢাকের বাদ্যের সঙ্গে চলছে দুর্গতিনাশিনীর আরাধনা।
দশভুজা দেবীর দর্শন, পূজায় অংশগ্রহণ আর একে অপরের সঙ্গে শারদীয় শুভেচ্ছা বিনিময়ে চলছে মহাসপ্তমী।
তিথি অনুযায়ী শুরু হয় মহাসপ্তমীর আনুষ্ঠানিকতা। একটি কলা গাছ গঙ্গার জলে স্নান করিয়ে, নববধূর মতো নতুন শাড়ি পরিয়ে দেবীকে কল্পনা করা হয় নয়টি রূপে। আর এরই মধ্যদিয়ে প্রকৃতির সঙ্গে দেবীর এক চিরন্তন সম্পর্ক স্থাপন হয়। দেবীর পাশে নবপত্রিকা ঘট প্রতিস্থাপনের পর দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে শুরু হয় মহাসপ্তমীর পুজো।
পর্দায় ঢাকা ঘেরাটোপে পুরোহিতের উপস্থিতিতে মহাসপ্তমীর সকালে শুদ্ধাচারে ডান হাতে কুশের অগ্রভাগ নিয়ে দেবী দুর্গাকে কাজল পরানো হয়। প্রথমে ত্রিনয়ন, তারপর বাম চক্ষু ও শেষে ডান চক্ষু আঁকা হয় মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে। এরই মধ্য দিয়ে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয় দেবী-দুর্গার মাঝে। লেলিহান মুদ্রায় মোট ১০৮বার বীজমন্ত্র জপ করা হয়। চক্ষুদানের পর ভক্তরা আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে করা হয় কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজা। সবশেষে বেলা সাড়ে ১১টায় দেবীকে অঞ্জলি দেন ভক্তরা।
আরও পড়ুন:
ভক্তদের মধ্যে একজন বলেন, ‘সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী আমরা সকালে অঞ্জলি দেবো। তারপর রাতের বেলা ঘোরাঘুরি, খাওয়াদাওয়া, অনেক প্ল্যান আছে।’
অন্য একজন বলেন, ‘দেবী দুর্গার কাছে প্রথম প্রার্থনা এ বিশ্বে যেন শান্তি থাকে। যে যুদ্ধগুলো হচ্ছে সেগুলো থেকে যেন বিশ্ব মুক্তি পায়।’
এ দিনেই ত্রিনয়নী দেবীর সবচেয়ে ভয়ানক কালরাত্রি রূপের পুজো করেন ভক্তরা। অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠা করেন দেবী কালরাত্রি।
পুরোহিতদের মধ্যে একজন বলেন, ‘দেবী হচ্ছেন জগত জননী, তিনি ভগবতী। তিনি রোগ, শোক, দুঃখ, বেদনা- সবকিছুর পরিত্রাতা।’
লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিককে নিয়ে সপরিবারের বাবার বাড়িতে এসেছেন দুর্গা। দশমী অবদি থাকবেন ভক্তদের মাঝে।





