দুর্নীতি দমনে বিএনপির ৭ দফা পরিকল্পনা প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান | ছবি: এখন টিভি
0

দুর্নীতি বাংলাদেশের অগ্রগতি ও জনগণের দৈনন্দিন জীবনকে পঙ্গু করে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেতে সংগ্রাম করা একজন গ্র্যাজুয়েট, সাধারণ সরকারি সেবা পেতে মাসের পর মাস ভোগান্তিতে থাকা কৃষক কিংবা হাসপাতালে সেবাবঞ্চনার শিকার একটি পরিবার—এসব উদাহরণই প্রমাণ করে, দুর্নীতি কীভাবে মানুষের জীবনকে দমবন্ধ করে ফেলছে।’

আজ (মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে এসব কথা বলেন তিনি। একইসঙ্গে দুর্নীতি দমনে বিএনপির সাত দফা পরিকল্পনাও তুলে ধরেন।

তারেক রহমান লিখেছেন, খাবারের দাম কেন বাড়ে, স্কুলে মানসম্মত শিক্ষা পাওয়া কঠিন কেন, রাস্তায় নিরাপত্তাহীনতা কেন—সব কিছুর মূলে রয়েছে দুর্নীতি। তিনি আরও বলেন, ‘বহু বছর ধরেই বাংলাদেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চলছে; তবে বিএনপির শাসনামলেই এ লড়াই সবচেয়ে বেশি গতি পেয়েছিল।’

তিনি উল্লেখ করেন, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, সরকারি সেবায় স্বচ্ছতা, অর্থনীতিকে মুক্ত করা—এসব উদ্যোগে অনিয়ম কমেছিল। পরে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সময় নতুন ক্রয় নীতিমালা, কঠোর আর্থিক আইন, শক্তিশালী অডিট ব্যবস্থা ও নজরদারি কার্যক্রম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ ছিল ২০০৪ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গঠন, যা দেশের জবাবদিহিতা ব্যবস্থায় বড় অগ্রগতি হিসেবে বিশ্বব্যাংক-এডিবি প্রশংসা করেছিল।

আরও পড়ুন:

বিএনপির দাবি, দুর্নীতি কমাতে অতীতে যেসব পদক্ষেপে সাফল্য এসেছিল

১. শক্তিশালী সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনা—বাজেট নিয়ন্ত্রণ, অডিট ও মানি লন্ডারিংবিরোধী আইন।

২. স্বচ্ছ সরকারি ক্রয়—প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র, নীতিমালা অনুসরণ।

৩. উন্মুক্ত বাজারনীতি—টেলিকম, মিডিয়া, বিমান পরিবহন খাতে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি।

৪. প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণ—ক্ষমতার অপব্যবহার কমিয়ে সেবায় জবাবদিহিতা বৃদ্ধি।

আগামী দিনে দুর্নীতি দমনে বিএনপির সাত দফা পরিকল্পনা

১. আদালত, দুদক, নির্বাচন কমিশন ও সরকারি সেবাখাতসহ সব প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।

২. পুরোপুরি স্বচ্ছতার ব্যবস্থা—উন্মুক্ত দরপত্র, সম্পদ বিবরণী, রিয়েল-টাইম অডিট, শক্তিশালী তথ্য অধিকার আইন।

৩. বিচার ও আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার সংস্কার—পেশাদার পুলিশিং ও দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি।

৪. ই-গভর্ন্যান্স—লাইসেন্স, জমি, পেমেন্টসহ অধিকাংশ সেবা অনলাইনে এনে ঘুষ কমানো।

৫. হুইসলব্লোয়ার সুরক্ষা—অনিয়ম ফাঁসকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

৬. নৈতিক শিক্ষা—স্কুল-কলেজে সততার চর্চাকে পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা।

৭. আর্থিক নজরদারি জোরদার—ডিজিটাল ব্যয় ট্র্যাকিং, স্বাধীন অডিট ও সংসদের তদারকি বৃদ্ধি।

তারেক রহমান বলেন, ‘বহু বছরের অব্যবস্থাপনার পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। সৎ নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা ও জনগণের সমর্থন একসঙ্গে এলে পরিবর্তন অবশ্যই সম্ভব। জনগণ দায়িত্ব দিলে বিএনপি আবারও সেই লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।’

এনএইচ