যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান বা যেসব সংস্কার আগামীতে রাষ্ট্রের ভিত ও গণতন্ত্র সমুন্নত রাখবে সেসব সংস্কার নির্বাচিত সরকার চালিয়ে যাবে কি না এমন দ্বিধা থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যত বিতর্ক।
আজ (বুধবার, ১২ নভেম্বর) দ্বিধা কাটিয়ে কোনো কিছু চাপিয়ে না দিয়ে, নির্বাচিত সরকারের ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানান বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। বিএনপি জনগণের ম্যান্ডেট পেলে পরিপূর্ণ সংস্কার করবে বলে জানান আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কোনো কিছু চাপিয়ে না দিয়ে, নির্বাচিত সরকারের ওপর আস্থা রাখতে হবে। একটি দল এমন কিছু সামনে নিয়ে আসা এসেছে, যেগুলো ঐকমত্য কমিশনে আলোচনা হয়নি। ভারত থেকে মাফিয়া নেত্রী আগামী দিনে অনেক নাশকতা করতে চাইবে, ঐক্যবদ্ধভাবে সেগুলোকে প্রতিরোধ করতে হবে।’
আমির খসরু বলেন, ‘জাতি নতুন চ্যালেঞ্জে পড়েছে। যেটিকে ৭ নভেম্বরের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে মোকাবিলা করতে হবে। জনগণের ম্যান্ডেট পেলে পরিপূর্ণ সংস্কার করবে বিএনপি।’
আরও পড়ুন:
এসময় দলের শীর্ষ নেতারা জানান, যত ষড়যন্ত্রই হোক, ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী নির্বাচনকে সফল করতে হবে। আর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, উদ্দেশ্যমূলকভাবে একটি অপ্রয়োজনীয় সংকট তৈরি করা হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘যত ষড়যন্ত্রই হোক না কেন আগামী নির্বাচনকে সফল করতে হবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটি অপ্রয়োজনীয় সংকট তৈরি করা হয়েছে। যা উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হয়েছে। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে সে সংকট মোকাবিলা করতে হবে।’
শেষে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট চাওয়ার কড়া সমালোচনা করে বলেন, কর্মহীন মানুষের কাছে গণভোটের চেয়ে তার কর্মসংস্থান বেশি জরুরি।
তারেক রহমান বলেন, ‘লোকসানের মুখোমুখি আলু চাষির কাছে গণভোটের চেয়ে আলুর ন্যায্য দাম পাওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ। গণভোটের চেয়ে পেঁয়াজ সংরক্ষণে টাকা খরচ করা বেশি গ্রহণযোগ্য। কর্মহীন মানুষের কাছে হাজার কোটি টাকার গণভোটের চেয়ে একটি চাকরি বেশি জরুরি।’
আরও পড়ুন:
তিনি জানান, কয়েকটি রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিপক্ষে দাঁড়াচ্ছে। এসময় সরকারকে হুমকি না দিয়ে, ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জনগণের মুখোমুখি হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আমার আহ্বান আপনারা বর্তমান সরকারকে হুমকি না দিয়ে, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জনগণের মুখোমুখি হোন। কয়েকটি রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিপক্ষে দাঁড়াচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘নারীর কর্মঘণ্টা কমানোর কথা বলে মালিকদের কি নারীদের চাকরি না দেয়ার বিষয়ে উৎসাহিত করা হচ্ছে না?’
কিছু দল নানা শর্ত দিয়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাঁধার সৃষ্টি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ‘কিছু দল নানা শর্ত দিয়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাঁধার সৃষ্টি করছে। গণভোটের আড়ালে পতিত স্বৈরাচারের পুনর্বাসনের সুযোগ করছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পরাজিত স্বৈরাচার একটি দলের ছাতার নিচে আশ্রয় নিচ্ছে কি না সেটি দেখার সময় এসেছে।’





