উর্বরা এই মাটির সাথে কৃষকের নিবিড় যৌথতা। এ মাটিতেই সবুজের আল্পনা সাজিয়ে তোলেন প্রান্তিক চাষীরা। তবে মাটিতে জলের টান পড়লে কপালে ভাঁজ পড়ে কৃষকের। ব্যাহত হয় উৎপাদন।
উত্তর জনপদের বেশকিছু অঞ্চলে কৃষকের সেচের দুশ্চিন্তা দূর করেছে সোলার পাম্প। ডিজেলচালিত পাম্প মেশিনের বিকল্প হিসেবে কাজ করছে এটি।
জীবাশ্ম জ্বালানির রাহুমুক্ত হয়ে নবায়নযোগ্য এই পদ্ধতিতে সেচ খরচ কমেছে অর্ধেক। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের তত্ত্বাবধান ও বেসরকারি ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের অর্থায়নে সেচ সহায়তা পাচ্ছেন রংপুরের প্রান্তিক চাষীরা।
সিএসআর প্রকল্পের আওতায় রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলায় বসানো হয়েছে ২৮টি সোলার পাম্প। যার মধ্যে রংপুরে ৯টি, দিনাজপুরে ১১টি, নীলফামারীতে ৪টি, কুড়িগ্রামে ৩টি ও লালমনিরহাটে ১টি সোলার পাম্প বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
প্রতিটি পাম্প তত্ত্বাবধান করেন পাঁচজন করে কৃষক। যারা নিজেদের জমিতে সেচ নেয়ার পাশাপাশি অন্যদের পানি সরবরাহের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনেরও সুযোগ পাচ্ছেন।
রংপুরে ব্র্যাক মাইক্রোফাইন্যান্সের রিজিওনাল ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘কোনো ফসল করতে পারতো না। জমি আছে কিন্তু আবাদ করতে পারতো না। আবাদ করলেও প্রাকৃতিক বৃষ্টির মাধ্যমে আবাদ করতে পারতো। কিন্তু বাড়তি ফসল হতো না। এখন দেখা গেছে তারা এ সুবিধা পাচ্ছে।’
এ ধরনের সেচ প্রকল্পকে কৃষির জন্য আশীর্বাদ বলছেন কৃষি অর্থনীতিবিদরা। বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারিভাবেও সহায়তার তাগিদ তাদের।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘রবি শস্য এখন কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সেচনির্ভর হয়ে যাচ্ছে। এ সেচনির্ভরতা কাটানোর জন্য আমাদের অবশ্যই ইন্ডিজেনাস ইরিগেশন এবং এর যে ইমপ্রুভমেন্ট যেটা বেসরকারি সংস্থাগুলো নিরন্তর করে যাচ্ছে এটার যথেষ্ট গুরুত্ব আছে।’
প্রকল্প পরিচালনাকারীরা বলছেন, সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে নিয়মিত সহায়তা কার্যক্রম এটি। দেশে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তা সুসংহত, খাদ্য ব্যবস্থাপনা গতিশীল করার পাশাপাশি কৃষির আধুনিকায়নের লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ চলমান রয়েছে।
স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং করপোরেট অ্যাফেয়ার্স প্রধান বিটপী দাস চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এখানে কার্বন নিঃসরণ কমাচ্ছি। কোনো রকমের তেলের পাম্প ব্যবহার হচ্ছে না বলেই চলে। সুতরাং আমরা ভাবছি পরিবেশগত অনেক দিক দেখেও আমরা প্রকল্প পরিচালনা করছি।’