প্রায় ১শ’ বছর আগে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার আজকিতলা গ্রামে লটকন চাষ শুরু হয়। পরবর্তীতে তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো জেলা জুড়ে। বর্তমানে নরসিংদীর লটকন দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও।
নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার লটকন চাষি ইমাম উদ্দিন সরকার৷ ৩ দশক আগে মাত্র ৯ টি গাছ দিয়ে লটকন আবাদ শুরু করেন তিনি৷ বর্তমানে ৪শ' শতাংশ জমিতে প্রায় ৩শ লটকন গাছ আছে তার।
শুধু ইমাম উদ্দিন নয়, জেলায় অন্তত ২০ হাজার কৃষক বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন লটকন। প্রতিটি গাছ থেকে পাওয়া যায় গড়ে প্রায় ১২ মণ ফল। আর বাজারে মানভেদে প্রতিমণ লটকন বিক্রি হয় ২ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকায়। লটকন চাষে জেলার শিবপুর, বেলাব এবং রায়পুরা অঞ্চলে গতি পেয়েছে অর্থনীতির চাকা ।
লটকনচাষি ইমাম উদ্দিন বলেন, 'অল্প করে গাছ লাগিয়েছিলাম যখন দেখলাম এইটার মধ্যে লাভ হচ্ছে তখন বড় পরিসরে চাষ শুরু করি।'
চলতি বছর নরসিংদীতে ২ হাজার হেক্টর জমিতে লটকন আবাদ করা হয়েছে। যেখান থেকে উৎপাদন হচ্ছে ৩০ হাজার টন লটকন। এতে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার মানুষের। প্রতি মাসে শ্রমিকদের আয় প্রায় ২০ হাজার টাকা।
কর্মচারীদের একজন বলেন, 'এখানে চুক্তি হিসেবে কাজ করি। তিন মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা করে দেয়। '
পাইকার ব্যবসায়ীদের একজন বলেন, 'বাগান থেকে পাইকারি কিনে নিয়ে পাইকারি বিক্রি করি যারা পাইকারি কিনে তারা আবার খুচরা বিক্রি করে।'
কৃষি বিভাগ বলছে, গত পাঁচ বছরে জেলায় লটকন আবাদ বেড়েছে ১২ শতাংশ। দেশের চাহিদা মিটিয়ে এখানকার লটকন রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে।
নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, 'ভালোভাবে বাজারজাত করার জন্য আমরা বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি কৃষকদের।'
নরসিংদীতে চলতি বছর উৎপাদিত লটকনের বাজার মূল্য প্রায় ১শ কোটি টাকা। গত বছরের চেয়ে যা অন্তত ১৫ কোটি টাকা বেশি।