শেরপুর সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের কৃষক লিটন মিয়া এবার ৭৫ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছেন। আলু-বীজ, সার, সেচ এবং শ্রমিকসহ তার খরচ হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। কিন্তু হঠাৎ তীব্র শীত ও কুয়াশায় আলুর খেতে মড়ক রোগ দেখা দিয়েছে। এতে পচে যাচ্ছে আলুর পাতা ও কাণ্ড। ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করেও মিলছে না তেমন ফল।
লিটন মিয়া বলেন, ‘আলু গাছ মরে যাচ্ছে। এখন আমরা কী করবো বুঝতে পারছি না।’
কৃষক লিটন মিয়ার মতো দুই বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছেন কৃষক মোজাম্মেল হক। তবে এজন্য তাকে বিএডিসি থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিতে হয়েছে। কিন্তু আলু ক্ষেতে মড়ক রোগ হওয়ায় সেই ঋণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
তিনি বলেন, ‘মড়ক রোগে সব গাছ ও আলু নষ্ট হয়ে গেছে। লাভ তো দূরের কথা আমি ঋণের টাকাও তুলতে পারবো না।’
এ রোগের আক্রমণে আলু গাছের পাতায় হালকা থেকে গাঢ় সবুজ রঙের বৃত্তাকার দেখা যায়। ঠান্ডা ও আর্দ্র আবহাওয়া দীর্ঘ সময় থাকলে পাতা বাদামি বা কালো দাগে পরিণত হয়। এরপর মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে নতুন নতুন গাছ সংক্রমিত হয়। আর এক সপ্তাহের মধ্যে সব গাছ মরে যায়।
এদিকে আলুর মড়ক রোগে গাছ পঁচে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দিশেহারা বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চুক্তিবদ্ধ প্রায় শতাধিক কৃষক।
শেরপুর বিএডিসি’র উপসহকারী পরিচালক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আমরা কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি।’
শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সুকল্প দাস বলেন, ‘আমরা কৃষকেদেরকে অনুমোদিত ছত্রাকনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছি।’
জেলায় এ বছর ৫ হাজার ২১১ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গেল বছর এখানে উৎপাদিত ২০০ টন আলু মালয়েশিয়া, রাশিয়া ও শ্রীলঙ্কায় রপ্তানি হয়।