হলুদের সমারোহে মাতোয়ারা চারপাশ। যেদিকে চোখ যায় হলুদ আর হলুদ। দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ জুড়ে এখন দোল খাচ্ছে সরিষার ফুল। তারই বরণে সেজেছে যশোরের মাঠগুলো। এই সৌন্দর্য উপভোগ করছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। সেই সাথে সরিষা ফুলের মিষ্টি সুবাস গ্রামীণ জনপদকে করে তুলেছে মধুময়।
যশোর সদর উপজেলার তপসিডাঙ্গা গ্রামের আরমান মন্ডল। ১ বিঘা জমিতে করেছেন সরিষার আবাদ। এতে তার খরচ হয়েছে ২ হাজার টাকা। এই জমি থেকে ১২ হাজার টাকার সরিষা বিক্রির আশা তার।
সরিষা চাষি আরমান মন্ডল বলেন, ‘সার দিলে সরিষা ভালো হয়। বিঘা প্রতি ৩ থেকে ৪ মণ সরিষা পাওয়া যায়।’
কৃষকরা জানান, একই জমিতে আগাম জাতের আমন ধান চাষের পর সরিষা চাষ এবং সেই জমিতেই আবার বোরো ধান আবাদ করতে পারছেন তারা। এর ফলে একদিকে যেমন একই জমিতে তিন ফসল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে তেমনি রক্ষা পাচ্ছে জমির উর্বরতা।
কৃষকদের একজন বলেন, ‘এই সরিষা চাষে খরচ একটু কম হয়। লাভ একটু বেশি হয়।’ আরেকজন কৃষক বলেন, ‘এই সরিষা চাষের উদ্দেশ্য নিজের কিছু খায় বাকিটা বিক্রি করি।’
এদিকে, ফলন বাড়াতে সরিষা ক্ষেতের পাশে বসানো হয়েছে সারি সারি মৌ বাক্স। ফুলে ফুলে মৌমাছির মধু আহরণের ফলে সরিষার পরাগায়ন ক্ষমতা বাড়ায় উৎপাদন ভালো হয়। অন্যদিকে মধু বিক্রি করেও আসে বাড়তি আয়।
মধু চাষি বলেন, ‘মৌমাছি উপকারী প্রাণী, ক্ষতিকারক না। সরিষা ক্ষেতে এরা পরাগায়ন করে।’
এবছর কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা আবাদ করেছেন। এতে করে চাষ কম হলেও উৎপাদন হবে বেশি। চাষাবাদে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতার কথা জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. আবুল হাসান বলেন, ‘আমরা আশাবাদী এবার উৎপাদন বেশি হবে। কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি কিভাবে বেশি ফলন করা যায়।’
গত বছর ৩১ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হলেও চলতি মৌসুমে ২৫ হাজার ২৫৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। যা থেকে সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ৩০০ মেট্রিকটন।