সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলায় বোরো ফসল রক্ষায় এবার বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৫ কোটি টাকা। ৭৩৫টি প্রকল্পের মাধ্যমে পুরো জেলায় ১ হাজার ৭১৮ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের কথা রয়েছে। যার মধ্যে ৭৩৩টি অংশে ৫৯১ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। যা ফেব্রুয়ারির মাসের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা। কিন্তু তাহিরপুর, মধ্যনগর ও বিশ্বম্ভপুর উপজেলায় বেশ কয়েকটি প্রকল্পে অনেক স্থানে এখনও কাজ শুরু হয়নি।
এরমধ্যে বিশ্বম্ভপুরের খরচার হাওরের বাঁকা বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে গেলো ডিসেম্বরে। তবে এখনও শেষ হয়নি মাটি ফেলার কাজ। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মো. লাকি মিয়া জানান, 'বৃষ্টির আগে বাঁধের কাজ সম্পন্ন না হলে নির্মাণের পরও ঝুঁকি থেকে যায়।'
এক কৃষক বলেন, 'আগে থেকে বাঁধা থাকলে আমাদের চিন্তা কম হয়। বাঁধ না থাকলে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যায়।'
সংশ্লিষ্টদের দাবি এমন অবস্থায় নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষতো দূরের কথা অনেক স্থানে এখনও গঠন হয়নি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি। তাই প্রতিনিয়তই বাড়ছে বোরো ফসল নষ্টের ঝুঁকি।
সুনামগঞ্জ হাওর বাঁচাও আন্দোলনের প্রকল্প মনিটরিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয় সেন রায় বলেন, 'কোনো কোনো জায়গায় পিআইসি'ই গঠন হয়নি। তাই নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হবে না। আমরা এ নিয়ে শঙ্কায় আছি।'
তবে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি, দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। বাকি স্থানগুলোর কাজও নির্ধারিত সময়ে শেষ হবে।
সুনামগঞ্জ পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, 'আমাদের মাঠ পর্যায়ে যারা আছেন তারা সব মনিটরিং করছে। কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। নীতিমালায় ২৮ ফেব্রুয়ারির ভিতর কাজ শেষ করার কথা বলা আছে। আশা করি তার ভিতর কাজ শেষ করতে পারব।'
২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সুনামগঞ্জে প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় ৬৬৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার ফসলের ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চলতি বছর জেলায় ২ লাখ ২৩ হাজার ২৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদে ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২০২ টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে কৃষি বিভাগের। যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৪ হাজার ১১০ কোটি টাকা।