দেশে এখন
0

সুনামগঞ্জ হাওরের বাঁধ নির্মাণ শুরু ১৫ ডিসেম্বর

বন্যার পানি নামতে দেরি করায় সুনামগঞ্জ হাওরের বাঁধ নির্মাণ কাজের জরিপ শুরু হয়েছে দেরিতে। নভেম্বরের মধ্যে জরিপের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত হয়েছে অর্ধেকেরও কম। এ অবস্থাতেই ১৫ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার কাজ। তবে এবার নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হলে ঝুঁকিতে থাকবে হাওরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বোরো ধান। চলতি বছর বাঁধ নির্মাণকাজে ইতোমধ্যেই ১২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। জরিপ শেষ হলে যা আরো বাড়বে।

ভাটির জেলা হিসেবে পরিচিত সুনামগঞ্জের প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের ভাগ্য নির্ভর করে হাওরের বোরো ধানের ওপর। কিন্তু ২০১৭ সালের আগাম বন্যায় এ অঞ্চলের শতভাগ ফসলহানিতে বিপাকে পড়েন জেলার কৃষকরা। সাথে প্রভাব পড়ে জেলা পর্যায়ের অর্থনীতিতে। পরে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে নতুন নীতিমালা গঠন করে সরকার। যেখানে ঠিকাদারি প্রথা বাদ দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি বা পিআইসির মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণের নতুন নিয়ম করা হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, জেলার ছোট-বড় ১৩৪টি হাওরে প্রতি বছর সোয়া দুই লাখ হেক্টরের মতো জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়। বিপুল এ ফসল রক্ষায় হাওরে বেড়িবাঁধ আছে এক হাজার ৭১৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে এক হাজার ১৬২ কিলোমিটার বাঁধের জরিপের কাজ নভেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত জরিপ হয়েছে অর্ধেকেরও কম।

এছাড়া নীতিমালা অনুযায়ী, নভেম্বর মাসের মধ্যে প্রকল্প নির্ধারণ ও পিআইসি গঠনের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও চলতি বছর পানি নামতে দেরি হওয়ায় সব কাজই শুরু হয় দেরিতে। তবে চলতি বছর দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও বাঁধ নির্মাণে অগ্রগতি না থাকায় চরম দুশ্চিন্তায় হাওরের কৃষকরা। এছাড়া নির্মাণ কাজ সঠিকভাবে হওয়া নিয়েও শঙ্কা হাওরের নেতাদের।

একজন কৃষক বলেন, ‘আমরা বোরো মৌসুম লাগানোর পরপরই বেড়িবাঁধ হওয়ার কথা। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাঁধের কোনো খবর নেই।’

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন, ‘এমনিই যেভাবে হওয়ার কথা সেভাবে হয় না। ২০১৮ সালেও ঠিক আছে। এরপর থেকে বিচ্যুতি ঘটেছে। নীতিমালা ফলই করা হয় না।’

এবার প্রথম পর্যায়ে সুনামগঞ্জ হাওরের বাঁধ নির্মাণ বাবদ ১২৪ কোটি টাকার বরাদ্দ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। তবে জরিপের কাজ শেষ হলে বরাদ্দের পরিমাণ আরও বাড়বে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমরা সুনামগঞ্জে প্রায় ৬৭৫টি স্কিম অনুমোদন দিয়েছি। আশা করি নির্ধারিত সময়ের ভেতর কাজ শুরু করতে পারবো।’

১৫ ডিসেম্বর থেকে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাঁধ নির্মাণ কাজের মেয়াদকাল। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হলে আসন্ন বোরো মৌসুমে আগাম ঢল ও বন্যায় ফসলের ক্ষতির শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে হাওরের কৃষকদের। তাই যথা সময়ে কাজ সম্পন্নের দাবি তাদের।

এসএস