ঘাটাইলের কাজলা গ্রামের আব্দুস সাত্তার হিরুর সাড়ে ৫ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করতে এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় বিশ লাখ টাকা।
ভোক্তা পর্যায়ে চাহিদার ধারাবাহিকতা থাকলে এ মৌসুমেই ৪০ লাখ টাকার ফল বিক্রির আশা করছেন তিনি। তবে উৎপাদন অনুযায়ী পর্যাপ্ত বাজার তৈরি না হওয়ায় হতাশ তিনি।
আব্দুস সাত্তার হিরু বলেন, 'ড্রাগন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। দেশীয় কৃষি ফসলগুলোর দাম কিন্তু এত বেশি না। আর ড্রাগনের ঝুঁকিও কম, একবার লাগাইলে ২৫ বছরের বেশি বাগান রাখা যায়।'
অন্য যেকোনো ফসলের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি লাভ হওয়ায় নতুন নতুন উদ্যোক্তারা ড্রাগন ফল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তারা বলছেন দেশের চাহিদার অতিরিক্ত ফল রপ্তানি করা না গেলে একটা সময় হুমকির মুখে পড়বে ক্ষেত্রটি।
ড্রাগন চাষিরা বলেন, 'অন্যান্য চাষের তুলনায় ড্রাগন চাষ অনেক লাভজনক। এজন্য সকলেই এটা চাষ করতেছি। ফলগুলো বিদেশে রপ্তানি করতে পারলে আরও বেশি লাভ হইতো।'
ড্রাগন ফল চাষে সারা বছরই পরিচর্যার প্রয়োজন পড়ে বলে স্থানীয় শ্রমিকদের জন্য সৃষ্টি হয়েছে স্থায়ী কর্মস্থানের সুযোগ।
ড্রাগন শ্রমিকরা জানান, এই বাগানের কাজ সারাবছরই থাকে। তাই বেতন ভালোই পাওয়া যায়। পরিবার নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে চলতে পারছেন তারা।
অর্থকরী এই ফসলটির চাষ এগিয়ে নিতে ও নতুন নতুন বাজার সৃষ্টিতে কৃষি বিভাগ কাজ করছে বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সাজ্জাদ তালুকদার।
তিনি বলেন, 'নিরাপদ ড্রাগন উৎপাদনের জন্য কৃষকদেরকে আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন প্রকল্প থেকে প্রদর্শনী আকারে ড্রাগন বাগানের ব্যবস্থা করে থাকি।'
এদিকে জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম বলেছেন, ফলটির নির্দিষ্ট হাট, সংরক্ষণাগার ও বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, 'কৃষি বিভাগের সাথে কথা বলে একটা সংরক্ষণাগার তৈরি করার পাশাপাশি বাজার ত্বরান্বিত করার ব্যাপারে কাজ করছি।'
জেলার ঘাটাইল, মধুপুর, সখিপুরসহ বিভিন্ন এলাকার ৭৩ হেক্টর জমিতে প্রায় ১ হাজার ২ শ ৩০ মেট্রিক টন ড্রাগন ফল উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। যার বাজার মূল্য প্রায় ৪০ কোটি টাকা।