কৃষি , গ্রামীণ কৃষি
দেশে এখন
0

সমন্বিত কৃষিতে কয়েকগুণ বেশি আয়

পঞ্চগড়ে সমন্বিত কৃষিতে ভাগ্য বদলাচ্ছে কৃষকদের।

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বানিয়াপাড়া এলাকার তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আব্দুস সাত্তার। গতানুগতিক কৃষির নানা চড়াই উতড়াই পেরিয়ে সমন্বিত চাষবাসে ভাগ্য বদলেছে বলে দাবি তার।

একসময় প্রবাস জীবন কাটালেও দেনার বোঝা মাথায় নিয়ে ফিরে আসেন দেশে। এরপর একে একে চা বাগান, পেঁপে চাষ শুরু করলেও লোকসান তার পিছু ছাড়েনি। সবশেষ সমন্বিত কৃষিতে একইসঙ্গে ড্রাগন বাগান, মুরগি পালন, মাছ ও সুপারিচাষে সফলতা পেয়েছেন আব্দুস সাত্তার। পাশাপাশি তার এমন উদ্যোগে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে বেশ কয়েকজনের।

এই কৃষি উদ্যোক্তা বলেন, 'গতবছর আমার ৬০ শতক জমি থেকে সাড়ে দশ লাখ টাকার ড্রাগন বিক্রি হয়েছে। তাই এইবছর ড্রাগনচাষ আরও বাড়িয়েছি। সেইসাথে দেশি মুরগির চাষ করছি।'

শ্রমিকরা বলেন, 'এখানে অনেকদিন ধরে থাকতেছি। আগে বেতন কম আছিল, এখন ১৮ হাজার পাই। উনার উছিলায় আমরা ৫-৭ জন ভালোই চলতেসি।'

আব্দুস সাত্তারের মতো আরেক কৃষি উদ্যোক্তা দেবীগঞ্জের খোঁচাবাড়ি এলাকার স্কুলশিক্ষক শামসুল হক। বাড়ির উঠোন থেকে শুরু করে ৩ বিঘা জমির কোন অংশই যেন ফাঁকা নেই। পুকুরে করছেন হাঁস ও মাছের সমন্বিত চাষ।

পাড়ে সারিবদ্ধ সুপারি, পেঁপে, লটকন আর মরিচ গাছ। পাশাপাশি রয়েছে ঢেঁড়শ, বেগুন, পুঁইশাকসহ বিভিন্ন শাক সবজি। সনাতন কৃষি বাদ দিয়ে সমন্বিত এই কৃষি থেকে নানাভাবে আয় পাচ্ছেন তিনি।

শামসুল হক বলেন, 'ধান চাষ বাদেও সবজির পাশাপাশি মাছচাষ এবং হাঁস-মুরগির খামার করে আমরা লাভবান হতে পারি।'

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন সমন্বিত কৃষিতে জমির সুষম ব্যবহারে একাধিক ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি খামার ও মৎস্য চাষ করে কৃষি অর্থনীতিতে নতুনমাত্রা যোগ করছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, 'গতানুগতিক কৃষির বাইরেও আমাদের কিছু উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন মেনে আমরা কাজ করছি। এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী রাখবো না।'

কৃষিবিদদের আশা, তুলনামূলক সফলতায় দেশে সমন্বিত কৃষির পরিমাণ আরও বাড়বে। এতে চাষিদের আর্থিক স্বচ্ছলতার পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।