দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৪০ কিলোমিটার গতিতে প্রথমবারের মতো পার হয় নবনির্মিত যমুনা রেল সেতু। পরে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বুড়িমারি এক্সপ্রেস ট্রেনটি পার হয় এই রেল সেতু দিয়ে। এরমধ্যে দিয়ে ইতি ঘটলো বঙ্গবন্ধু সেতুতে ট্রেন চলাচল।
জাপান ও বাংলাদেশের যৌথ অর্থায়নে নির্মিত এই রেল সেতুর কাজ শুরু ২০২০ সালের আগস্টে। প্রায় সহস্রাধিক দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী আর শ্রমিকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে চার দশমিক আট কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু নির্মাণকাজ শেষ হয় গত বছরের সেপ্টেম্বরে।
এরপর ৫ জানুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হয় ৪০ কিলোমিটার থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে। যমুনা রেল সেতুতে দু'টি লাইন থাকলেও প্রথমে একটি লাইন দিয়ে উভয় দিকে ট্রেন চলাচল করবে। তবে আগামী ১৮ মার্চ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর দুই লাইনে শুরু হবে ট্রেন চলাচল জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
প্রকল্পে কাজ করা একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এবং দীর্ঘ পরিশ্রমের পর প্রথম একটা যাত্রীবাহী ট্রেন যাচ্ছে। এর আগে আমরা বিভিন্ন সময় কয়েকটা ট্রায়াল রান করেছি যেখানে মিটারগেজ এবং ব্রডগেজ দুইটা ট্রেনই চলাচল করেছে।’
স্টেশন মাস্টার জানান, ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল সম্ভব হলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্রথম দিনে কম গতিতে ট্রেন চলেছে।
ইব্রাহিমাবাদ রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. শাহীন মিয়া বলেন, ‘নতুন ব্রিজ দিয়ে সর্বপ্রথম ট্রেন হচ্ছে ৭৫৪ সিল্কসিটি এক্সপ্রেস। ওই পাড় থেকে ছাড়ার পর আমরা ১০ মিনিটে পৌঁছে গেছি। ডাবল লাইনটা আমাদের চালু হয়ে গেলেই ট্রেন একটা দিয়ে আসবে আর একটা দিয়ে যাবে।’
সেতুটি চালুর পর উভয় প্রান্তের স্টেশনে রেল ক্রসিংয়ের সময় বাঁচানোর পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যেও আরও গতি ফিরবে বলে আশা করা হচ্ছে। যমুনা রেল সেতুতে প্রথম যাতায়াত করে খুশি যাত্রীরা।
একজন যাত্রী বলেন, ‘অনুভূতি অসাধারণ। আমাদের অনেকদিনের স্বপ্ন যমুনার ওপর রেলসেতু হবে। সেটা পূরণ হয়েছে।’
নয় হাজার ৭৩৪ কোটি সাত লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি শুরু হলেও পরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এরমধ্যে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি ২ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে জাইকা।