ট্রেনের অভাবে ধুঁকছে নোয়াখালীর ডাকঘর, ভোগান্তিতে গ্রাহক

এখন জনপদে
দেশে এখন
0

মেইল ট্রেনের অভাবে ধুঁকছে নোয়াখালীর ডাকঘরগুলো। সময়মতো ডাক না আসায় অলস সময় কাটছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। নির্ধারিত সময়ে চিঠি কিংবা নথি না পাওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে গ্রাহকদের।

দেশের দক্ষিণের চার হাজার ২০২ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের জেলা নোয়াখালীতে প্রায় ৪০ লাখ মানুষের বসবাস। সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অফিস, আদালতের পাশাপাশি এখানে রয়েছে বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান। জেলাজুড়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কুরিয়ার সার্ভিস সেবা চালু থাকলেও সরকারি সকল চিঠিপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ নথি এখনো আনা-নেয়া হয় সরকারি ডাক বিভাগের মাধ্যমেই। তবে মেইল ট্রেনের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় ধুঁকছে গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগটি।

ট্রেনের উপর নির্ভর থাকায় ১০ থেকে ১২ দিন পর চিঠি কিংবা নথি পৌঁছায় স্বল্প দূরত্বের গ্রাহকের কাছে। সময়মতো ইএমএস, বিদেশি পার্সেল, পাসপোর্ট এবং বেইল বন্ডের চিঠিপত্র না পাওয়ায় হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ তাদের।

স্থানীয় একজন বলেন, ‘যেভাবে চিঠি দেয়, তা দেয়ার কথা এক দিন বা দুই দিনের ভেতরে। কিন্তু আমরা দেখি যে এটা ১০ দিনেও পাচ্ছি না।’

স্থানীয় অন্য একজন বলেন, ‘বিগত সাত থেকে আট দিন হলো এখানে ঘোরাঘুরি করছি। আমার একটা ইন্টারভিউয়ের চিঠি আসার কথা। কিন্তু এখনও তা আসেনি।’

গতবছরও ঢাকা থেকে নোয়খালী প্রতিদিন আলাদা দু'টি মেইল ট্রেন চলাচল করতো। তখন অল্প সময়ের মধ্যে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে গ্রাহকদের হাতে পৌঁছে দেয়া হতো। তবে বর্তমানে একটি ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় গ্রাহকদের ভোগান্তি পৌঁছেছে চরমে। এ অবস্থায় ডাক আদান-প্রদানে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়ার দাবি স্থানীয়দের।

স্থানীয় একজন বলেন, 'লোকাল ট্রেনে করে যে ডাকগুলো এখানে পাঠানোর কথা, দেখা গেছে গ্রাহকরা কয়েকদিনেও এ চিঠিগুলো পাচ্ছে না।'

রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ ডাক বিভাগের সংশ্লিষ্টরা। জানান, ডাক বহনের জন্য নিজস্ব গাড়ি নেই। এছাড়া পুরোনো গাড়িগুলোও নষ্ট। বিষয়টির বিকল্প সমাধান চান তারাও।

জেলা ডাকঘর কর্তৃপক্ষ বলছে, নিয়মিত ডাক না পাওয়ার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার মৌখিক ও লিখিতভাবে জানানো হলেও মেলেনি কোনো প্রতিকার। যদিও এ বিষয়ে কথা বলতে চায়নি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

নোয়াখালী প্রধান ডাকঘরের সহকারী পোস্টমাস্টার জেনারেল কাম পোস্টমাস্টার মো. বেলাল হোসেন বলেন, 'যেহেতু ট্রেন ঠিকমতো আসে না। ট্রেনের সাথে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চুক্তি নবায়ন করবে কি না সেটা একটা বিষয়। আমরা স্থানীয় ডাকগুলো কবার করি কিন্তু জেলার ডাকগুলো ট্রেনের উপর নির্ভরশীল। আমার মনে হয় এ নিয়ে চিন্তাভাবনা করা দরকার আছে।'

দক্ষিণের এই জনপদে রয়েছে ৮৬টি উপ-ডাকঘর ও ৪৭১টি শাখা ডাকঘর। বিকল্প উপায়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ঢাকা থেকে ডাক আনা-নেয়ার ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে চলমান সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এসএস