বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নেয়ার পাশাপাশি, চারদিনের সফরে উচ্চ পর্যায়ের প্রায় ৫০ টি সাইড ইভেন্ট অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা। সফরের শেষদিন সাতটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান।
সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক এনগোজি ওকানজো ইওয়েলার সঙ্গে বৈঠক করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা ডব্লিউটিও মহাপরিচালককে জানান, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। বাংলাদেশ এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
এ সময় ইওয়েলা বলেন, বিশ্বের শীর্ষ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশে তাদের শিল্পের স্থানান্তর করার আহ্বান জানাবেন তিনি। এছাড়া আশ্বাস দেন, এলডিসি উত্তরণের পরও ডিউটি ফ্রি বাণিজ্যিক সুবিধা দেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা।
এদিন প্রধান উপদেষ্টা সঙ্গে বৈঠক করেন রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল কোম্পানির নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আমের আলী রেজা। মাতারবাড়ির গভীর-সমুদ্র বন্দর পরিচালনায় আগ্রহ প্রকাশ করে আলী রেজা বলেন, মাতারবাড়িকে এই অঞ্চলের অন্যতম প্রধান শিপিং হাব হিসেবে রূপান্তর করতে আগ্রহী তার কোম্পানি। এছাড়া পতেঙ্গা টার্মিনালের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রায় ২শ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা কথা জানান আলীরেজা।
অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারী রে ডালিও। ডোনাল ট্রাম্প ক্ষমতায় আসায় বাংলাদেশে কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না জানিয়ে রে ডালিও বলেন, উল্টো চীন থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন বাংলাদেশে সরে আসার সম্ভাবনা আছে।
পরে প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ড. ইউনূসের ব্যক্তিত্বে কারণে, এ সফরে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বনেতারা বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। তারা বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগকেও স্বাগত জানিয়েছে। তবে সফরে, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের ক্ষমতা বাড়ানো ও আশিয়ানের সদস্যপদ পেতে গুরুত্ব দেন প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতি পুরো বিশ্বের অ্যাটেনশন ফিরে এসেছে প্রফেসর ইউনূসের ইমেজের কারণে। বাংলাদেশে যে স্ট্যাবিলিটি ফিরে এসেছে সেটার বার্তা বিশ্বের বড় বড় ব্যবসায়ীরা পেয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এবার দাভোসে এসে উনি বার বার বলছেন যে চট্টগ্রাম বন্দরকে যেভাবেই হোক আমাদের এফিশিয়েন্ট করতে হবে। বে অব বেঙ্গল ধরে আমাদের বন্দরের যে কাঠামো রয়েছে সেটাকে বিশ্বমানের করতে হবে। এটার ওপর নির্ভর করছে কত ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি বাংলাদেশে আসবে কি আসবে না।’
চার দিনের সফর শেষে আজ (শনিবার) ঢাকা ফিরবেন প্রধান উপদেষ্টা।