তিস্তাপাড়ের মানুষের সাথে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে তিস্তা নদী। এর ভাঙন, ঢেউ আর চরের সাথে যেন এসব মানুষের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক।
তবে ভারতের পানি রাজনীতির কারণে ভোগান্তিও কম নয় তাদের। ভারতের অসম নীতির কারণে কখনও খরা আবার কখনও ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে এ জনপদ। ১৯৮৩ সালে দুই দেশের মধ্যে তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি হয়। যেখানে ৩৬ শতাংশ পাবে বাংলাদেশ এবং ৩৯ শতাংশ পাবে ভারত। বাকি ২৫ শতাংশ পানি নদীতে সংরক্ষিত রাখা হবে। কিন্তু কীভাবে এই পানি ভাগাভাগি হবে সে বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা ছিল না। এর বহুকাল পর ২০০৭ সালের যৌথ বৈঠকে তিস্তার পানির ৮০ শতাংশ দুদেশের সমান অংশে ভাগ করে অবশিষ্ট ২০ শতাংশ নদীর জন্য সংরক্ষিত রাখার বিষয়ে প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ। তবে ভারত এই প্রস্তাবে অসম্মতি জানায়।
অমিমাংসিত এ বিষয়ে ২০২১ সালে এগিয়ে আসে চীন। তিস্তার সমস্যা সমাধানে বিনিয়োগের প্রস্তাবিত প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর তার প্রতিবেদন জমা দিলেও তা গ্রহণ করে না তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে ভারতের সাথে চুক্তি করে শেখ হাসিনা। এর মধ্যে শেষ হয়ে যায় চীনের সাথে করা সমঝোতা স্বাক্ষরের সময়সীমা। এবার তা নিয়ে আশার কথা জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসান বলেন, 'এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। আমরা সেটা নবায়ন করবো, এটা হলো প্রথম কাজ। বাংলাদেশ অবশ্যই তার নিজের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিবে।'
এদিকে তিস্তা প্রকল্পের আগে তিস্তা পাড়ের মানুষের চাহিদাকে প্রাধান্য দেয়ার কথা জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। জানান, তাদের মতামতের উপর নির্ভর করবে সেখানে সেখানে মহাপরিকল্পনা হবে নাকি অন্য কিছু হবে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, 'অবশ্যই আমাদের সকল অভিন্ন নদীতে আমাদের যে পানির পরে স্বার্থ এটা রক্ষা করতে হবে। তিস্তা নদীতে লোকজন কী চায়, টার উপর ভিত্তি করে আমরা তিস্তার উপর পরিকল্পনা করবো। তিস্তার ব্যাপারে যে দেশই আমাদের সহায়তা করুক না কেন, জনগণের সাথে আলোচনা করতে হবে, জনগণ যা চায় পরিকল্পনায় তা প্রতিফলন ঘটাতে হবে।'
তিস্তার পানিতে বাংলাদেশের অধিকার থাকলেও সেই তার ন্যায্য ভাগ গেল কয়েক দশক ধরে পায়নি ভাটির দেশের লাখ লাখ মানুষ।