একই পরিবারের চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়। মরদেহের অপেক্ষায় স্বজন ও প্রতিবেশীরা।
নিহতেরা হলেন ভাবনদত্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এএইচ ফারুক সিদ্দিকী, তার স্ত্রী মহসিনা খন্দকার, ছেলে মহায়মিন সিদ্দিকী ফুয়াদ ও স্ত্রীর বড় বোন সীমা খন্দকার।
পরিবারের সদস্যরা জানান, বড় ছেলে ফুয়াদ সিদ্দিকী কিছুদিন থেকে অসুস্থ। শরীরে রক্ত কমে যায়। চিকিৎসার জন্য গত রাতে ছেলে ফুয়াদ সিদ্দিকীসহ পরিবারের চার সদস্য অ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।
ঘাটাইল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান তালুকদার বলেন, 'মরদেহগুলো এখনো ঢাকায় রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হবে।'
নিহত ফারুখ হোসেন সিদ্দিকীর ছোট ভাই মামুন সিদ্দিকী বলেন, 'তারা তিন ভাই এক বোন। বোন সবার বড়। ইতালি প্রবাসী। বড়ভাই ফারুখ সিদ্দিকী ভবন দত্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিল। বড় ছেলে ফুয়াদ সিদ্দিকী স্থানীয় ভবনদত্ত গণ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। হঠাৎ করেই কিছুদিন থেকে সে অসুস্থ। শরীরে রক্ত কমে যায়। তবে থ্যালাসেমিয়া নয়। ঢাকায় ডাক্তার দেখানোর জন্য গত রাত ১১ টার দিকে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা থেকে ছেলে ফুয়াদ সিদ্দিকী ও তার বোনকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স যোগে রওনা দেন ঢাকার উদ্দেশে।'
মামুন সিদ্দিকী জানান রাতে তার কাছে ফোন করে সবাইকে দোয়া করতে বলেন। এরপর আর কোনো কথা হয়নি।
ফারুখ সিদ্দিকীর সহকর্মী মো. রুবেল মিঞা বলেন, 'প্রধান শিক্ষক খুব নীতিবান ছিলেন। একজন নীতিবান মানুষের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আমরা সবাই চলে এসেছি। এমন শিক্ষক আর হবেনা। আমাদের সবসময় আগলে রাখতেন।'
নিহত ফারুখ সিদ্দিকীর চাচাতো বোন সোমা সিদ্দিকী বলেন, 'স্যারের ছোট ছেলে ফাহিম সিদ্দিকী হোস্টেলে থেকে মাদ্রাসায় পড়ে। সে এখনো জানে না তার বাবা মা আর ভাই পৃথিবীতে নেই।'
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হেপলু জানান, রাতে তিনি ফারুখ সিদ্দিকীকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়ে বাড়ি আসেন। এক সঙ্গে চা পান করেছেন। তার ভাষ্য এলাকায় ফারুখ সিদ্দিকীর মত ভালো মানুষ আর হবে না। তার মৃত্যুতে কাঁদছে পুরো গ্রামের মানুষ।