সময়টা ২০২৪, ১৬ বছরের দমন পীড়ন নির্যাতন বৈষম্যের প্রতিবাদে সোচ্চার হয় পুরো দেশ। এক দফা দাবি আদায়ে রাস্তায় নামে ছাত্র-জনতা। স্বৈরাচার হটাতে গুলির সামনে দাঁড়াতেও পিছপা হয়না। হাসিনা সরকারের পালিত বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারায় দেড় হাজার তাজা প্রাণ। আহত হয় হাজার হাজার মানুষ।
সবার সম্মিলিত প্রতিরোধে ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয় শেখ হাসিনা। ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠন হয় অন্তর্বর্তী সরকার। দল মত নির্বিশেষে আওয়ামী লীগের অপরাধের বিচার, ফ্যাসিবাদমুক্ত সমাজ গড়তে নতুন বাংলাদেশের পথে হাঁটা শুরু করে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে সরকার। কাজ শুরু করে সংস্কার কমিশনগুলো। একইসঙ্গে নির্বাচনের দাবিও আসে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে। সংস্কার, গণহত্যার বিচার ও নির্বাচনকে সামনে রেখে কাজ চলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বরাবরই বলা হচ্ছে।
গতকাল শনিবার ফেসবুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে প্রক্লেমেশন অব জুলাই ঘোষণার কথা জানায়। এরপর একে একে বৈষম্যবিরোধী নেতারাও পোস্ট দেন।
আজ (রোববার, ২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলামোটরে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে জুলাই ঘোষণার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। তারা বলেন, ৭২ এর মুজিববাদের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক দালিলিক ইশতেহার প্রক্লেমেশন অব জুলাই রেভোলিউশন। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা করা হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা মনে করি যারা এই আন্দোলনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত ছিল তাদের প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষাসহ সামগ্রিক বিষয়গুলো একটি ঘোষণাপত্রে লিপিবদ্ধ থাকা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে এ প্লাটফর্মটি কখনো রাজনৈতিক দলে রুপান্তরিত হবে না।’
সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের যে গণআকাঙ্খা তৈরি হয়েছে এবং মানুষ যে ৭২ এর সংবিধানের বিপরীতে গিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছে সেটার প্রাতিষ্ঠানিক দালিলিক স্বীকৃতি হিসেবে ৩১ ডিসেম্বর বেলা ৩ টায় ছাত্র-জনতার উপস্থিতিতে শহীদ মিনারে প্রক্লেমেশন অফ জুলাই রেভোলিউশন ঘোষণা করবো।’
তিনি বলেন, ‘৩১ ডিসেম্বর নাৎসিবাদী দল আওয়ামী লীগকে ইসতিহারের মাধ্যমে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা করা হবে। বিচার নিশ্চিতের ইসতিহার ঘোষণাও থাকবে এই প্রক্লেমেশনে।’
হাসনাত বলেন, ‘৩১ ডিসেম্বর জুলাই প্রক্লেমেশন এটা কোনো দলের প্রক্লেমেশন না।’
সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, ‘৫ আগস্ট আমরা প্রাথমিক বিজয় অর্জন করলেও আমাদের পূর্ণাঙ্গ বিজয় অর্জন হয়নি। আমাদের ২৪ এর আন্দোলন ও বিপ্লব ৯০ এর মতো বেহাত হতে দিতে চাচ্ছি না। আমরা মনে করি ২৪ এর রক্তের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশকে পুনর্গঠিত করতে হবে।’
ঐ দিন শহীদ মিনারে উপস্থিত থাকবেন দল মত নির্বিশেষে সবাই। এ কথা জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী নেতারা জুলাই আগস্টকে ধারণ করা সবাইকে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান।