নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের ফসলি জমির চিত্র এটি। জিনওয়ান স্টোরেজ লিমিটেড ব্যাটারি কারখানার সিসা ও অ্যাসিড মেশানো পানি ফেলা হচ্ছে জমিতেই। এতে পুড়ে অনেকটা কালচে রং ধারণ করেছে মাটি। হারিয়েছে উর্বরতা।
একই অবস্থা চরসিন্দুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিয়ম না মেনে ব্যাটারি তৈরি ও ফসলি জমিতে কারখানার বর্জ্য ফেলায় ব্যাহত হচ্ছে ফসল উৎপাদন। চর্মরোগসহ নানা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিশুরা, হুমকির মুখে গবাদিপশু পালন।
২০১৯ সালের দিকে হওয়া এই কারখানায় তৈরি হচ্ছে ৭টি ব্রান্ডের ব্যাটারি। নির্মাণের পাঁচ বছরেও এই প্রতিষ্ঠানের নেই কোনো অনুমোদন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানে গেলে বাধার সম্মুখীন হতে হয় টিম এখনকে। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে স্বীকার করে কাগজপত্রের ঘাটতির কথা। ফোনে প্রতিষ্ঠানের আরেক কর্মকর্তার সাথে কথা হলে পরিচয় লুকিয়ে চেষ্টা করেন সবকিছু ম্যানেজের।
জিনওয়ান স্টোরেজ লিমিটেডের কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি বর্তমানে ঢাকায় ছিলাম তো তাই ঢাকায় বসে কথা বলতে পারলে ভালো লাগত। আমরা সকল বিধিনিষেধ মেনেই কাজ করতে চাচ্ছি। সহ অবস্থানে থাকার জন্য আমরা কী করতে পারি তা আমাকে জানান’
পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, নানা অনিয়মের অভিযোগে কারখানা বন্ধ করতে চিঠি দেয় পরিবেশ মন্ত্রণালয়। তবে নভেম্বরে হাইকোর্টে রিট করে তা ঠেকিয়ে দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘ রিট পিটিশনের মাধ্যমে হাই কোর্ট তাদের ৬ মাসের একটা সময় দিয়েছে। এই ৬ মাসের মধ্যে তাদের পরিবেশগত যত ছাড়পত্র দরকার তা সংগ্রহ করতে হবে। যদি তা করতে তারা ব্যর্থ হয় তাহলে কারখানা বন্ধের হতে পারে।’
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো.কামরুজ্জামান সরকার বলেন, ‘কারখানা বন্ধ ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য আমি সুপারিশ করেছি। সে প্রেক্ষিতে অ্যাকশন নেয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা হাইকোর্টের রিটের আদেশ ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের আপিল থাকার কারণে এখন আর কোনো কার্যক্রম নিতে পারছি না।’
এ অবস্থায় জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়ার দাবি স্থানীয়দের। আর হাইকোর্টের রায়ের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছে প্রশাসন।