দেশে এখন
0

অরক্ষিত অবস্থায় পিরোজপুরের ৪৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ

দীর্ঘদিনেও হয় নি মেরামত

সিডর, আইলা, রিমালের মতো শক্তিশালী ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার দীর্ঘদিনেও মেরামত হয়নি পিরোজপুরের বেড়িবাঁধ। জেলার অন্তত ৪৫ কিলোমিটার বাঁধ অরক্ষিত অবস্থায়। টেকসই বাঁধ না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই বসবাস করছেন নদীতীরের অসংখ্য মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি সাইক্লোন সহনীয় বাঁধ নির্মাণে আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

উপকূলবাসীকে বছরে বেশ কয়েকবার ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসসহ দুর্যোগের মুখোমুখি হতে হয়। এরমধ্যে কোনো কোনো ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে সর্বশক্তি দিয়ে। এতে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে জোয়ার-জলোচ্ছ্বাসের পানি। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বা ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভয়ংকর রূপ ধারণ করে পিরোজপুরের কচা নদী। নদীটির টগরা ফেরিঘাটের দুই পাশে ১৫শ মিটারের মধ্যে দক্ষিণপ্রান্তের ৭শ মিটার বাঁধই ক্ষতিগ্রস্ত। এ বাঁধের মতোই পিরোজপুর জেলাকে সুরক্ষিত রাখতে বেড়িবাঁধ আছে ৩০৬ কিলোমিটার। যার মধ্যে প্রায় ৪৫ কিলোমিটারই ক্ষতিগ্রস্ত।

বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত না করা এবং অনেক স্থানে টেকসই বাঁধ না থাকায় ক্ষয়ক্ষতি কমানো যাচ্ছে না।

স্বাধীনতা পরবর্তী গেল ৫৩ বছরে দেশে বেশ কয়েকটি ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। যা অসংখ্য মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে। তবে, ফসল ও সম্পদ রক্ষায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এসব বাঁধ নির্মাণকাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ স্থানীয়দের।

পিরোজপুর সনাকের সহ-সভাপতি প্রফেসর আব্দুল জলিল আকন বলেন, ‘ইতঃপূর্বে যে বেড়িবাঁধ গুলো নির্মাণ হয়েছে সেগুলোতে দুর্নীতি আশ্রয় নেয়া হয়েছে এবং সঠিকভাবে কাজ করা হয় নাই। আমার পরামর্শ এখন একটি স্থায়ী বেড়িবাঁধ হওয়া দরকার।’

তবে, বাঁধ নির্মাণে স্থানীয়দের আগ্রহ থাকলেও জায়গা দিতে অনীহা রয়েছে বলে দাবি পানি উন্নয়ন বোর্ডের।

পিরোজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নুসাইর হোসেন বলেন, ‘বেড়িবাঁধ করার সময় আমাদের স্থানীয়দের থেকে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে, সাধারণ মানুষ জায়গা দিচ্ছে আবার তারা বেড়িবাঁধ চাচ্ছে। আসলে এটা একটি সমঝোতার মাধ্যমে তারা যদি জায়গা দিতে চায় তাহলে আমরা প্রস্তাবনা পাঠাতে পারি। তা নাহলে সরকারের পক্ষে জমি অধিগ্রহণ করে প্রকল্প ছাড়া এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব না।’

পিরোজপুর ছাড়াও ঘূর্ণিঝড়ে বরিশালের সব জেলার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও কিছু কিছু অংশ ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পুনর্নির্মাণ, সংস্কার ও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

দক্ষিণাঞ্চল বরিশালের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল হান্নান বলেন, ‘উপকলীয় এলাকার সব বাঁধগুলোকে বিবেচনা নিয়ে ১৯৭ কিলোমিটার বাঁধ পুনর্বাসন ও সাইক্লোন সহনীয় করতে হবে আমাদের। আমরা এ প্রস্তাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং ঢাকায় পাঠিয়েছি।’

বরিশাল বিভাগে ৬ জেলায় বেড়িবাঁধের দৈর্ঘ্য ৩ হাজার ২শ কিলোমিটার। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ ১৯৭ কিলোমিটার।

এএম