দেশে এখন
0

‘গুম হওয়া মানুষের সংখ্যা সাড়ে তিন থেকে চার হাজার হতে পারে’

গত ১৫ বছরে গুমের সব ঘটনার বিচার করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। গুম হওয়া ব্যক্তিদের দাবি, আন্তর্জাতিক আইনের আদলে দেশে গুমবিরোধী আইন প্রণয়ন করতে হবে।

অবস্থার পরিবর্তন হলো, কতজনই তো ফিরে পেলো তাদের স্বজন। কিন্তু এসব ১১ জনের শিশুর মনে এখনও দোলাচল, বাবাকে পাবো তো? জীবিত আছে কি আমার বাবা?

বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যানালাইসিস অ্যান্ড ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক বা ব্রেইন আয়োজিত গুমের জবানবন্দি ও স্মৃতির প্রতিরোধ শীর্ষক আলোচনা সভায় আসেন গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবার।

একযুগ আগে গুম হওয়া ইলিয়াস আলীর স্ত্রীর প্রশ্ন, সরকার তো জানতো কে বা কারা তার স্বামীকে উঠিয়ে নিয়েছে। তবুও কেন গণভবনে তাকে ডেকে নিয়ে কান্নার অভিনয় করলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা?

অন্যদিকে নানা সময়ে গুম হওয়া ব্যক্তিরা জানান তাদের সঙ্গে কি হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনাই তাদের জীবনে কাল হয়ে দাঁড়ায়।

গুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকা ব্যক্তিরা বলেন, প্রতিটা গুমের বিচার ধরে ধরে করতে হবে। যেন এটাই দৃষ্টান্ত হয়ে যায় আগামীর যেকোনো অপরাধের বিরুদ্ধে।

মায়ের ডাকের সংগঠক সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, ‘আমি যখন এই বাচ্চাদের ভবিষ্যতে তাদের বাবার সন্ধান দিতে পারবো তখনই আমরা বুঝবো যে আমরা একটা পরিবর্তিত অবস্থায় আছি বা আমরা একটা ন্যায়বিচারের জায়গায় যেতে পেরেছি।’

তিনি বলেন, ‘তাদের যে ইলিগ্যাল বা অবৈধ কাস্টোডিতে যাওয়ার যে এখতিয়ার নাই তাদের যে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর সেটা ডিফাইন করতে হবে। এবং তাদেরকে দেখিয়ে দিতে হবে বৈধ বা কতটুকুর জায়গার মধ্যে কীভাবে কাজ করা যাবে। বিচার বহির্ভূতভাবে একটা মানুষকেও আর ইলিগ্যাল কাস্টোডিতে ধরে নিয়ে যাওয়া যাবে না।’

মোবাশ্বর হাসান বলেন, ‘ভয় পাওয়ানোর একটা ঝুঁকি আছে। ভয় পাওয়াতে পাওয়াতে একটা বর্ডার লাইন আছে, সেটা অতিক্রম করলে ঘৃণা করা শুরু করবে। সেই ঘৃণা যদি অর্জন করো তাহলে খবর আছে। শেখ হাসিনার পতনের কয়েক বছর আগে থেকে এই গল্পটা বলছিলাম। শেখ হাসিনা ঘৃণা অর্জন করেছেন। ঘৃণা অর্জন করে তিনি পতনে ডেকে এনেছেন। এবং শেখ হাসিনা সবচেয়ে বেশি ঘৃণা অর্জন করেছেন গুমের মাধ্যমে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

গুম হওয়া মানুষের সংখ্যা হতে পারে সাড়ে তিন থেকে সাড়ে চার হাজার বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব। বলেন গুম হওয়া প্রতিটি বিচার এই সরকার করবে।

শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলতো দেশে ছয়শো সাতশো মানুষ গুম হয়েছে। এখন ওরা বলছে যে ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ওরাই অভিযোগের মধ্যে পাচ্ছে। এখনো অনেকে ভয়ের চাদরে ঢেকে আছে। ভয় থেকে বের হতে পারছেনা। এজন্য একজন দুইজন করে আসছে। আমরা এবং ওরাও মনে করছে এ গুম হওয়া মানুষের সংখ্যা সাড়ে তিন থেকে সাড়ে চার হাজার হবে।’

গুমকে বৈধতা দিতে গিয়ে সম্মতি সাধনে অনেকেই কাজ করেছে। যে যেই ধর্মের-বর্ণের হোক কোন মানুষ যেন গুমের স্বীকার না হন তার জন্য সরকার কাজ করবে বলে জানান প্রেস সচিব।

এএইচ