দেশে এখন
0

১৮ বছর ধরে রাজনৈতিক হিংসার ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে হতাহতদের পরিবার

১৪ দল-জামায়াত-বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ

২০০৬ ও ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর, ১৪ দল-জামায়াত এবং বিএনপি-পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মোট ১২ জন নেতাকর্মী মারা যান। তবে এসব হত্যার বিচার পায়নি নিহতের পরিবার। বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সরাসরি নির্দেশেই এসব হত্যা হওয়ায় মেলেনি সুষ্ঠু বিচার।

পিটিয়ে মানুষ মেরে, তার ওপর নৃত্য করার, এমন দৃশ্য এর আগে দেখেনি বাংলাদেশ।

২৮ অক্টোবর ২০০৬। বিএনপি জামায়াত সরকারের দেশ পরিচালনার জন্য নির্ধারিত সময়ের শেষ দিন। এমন অবস্থায় নয়াপল্টনে বিএনপি, বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে জামায়াত এবং পল্টন ময়দানে ১৪ দল সমাবেশের অনুমতি পায়। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর পক্ষ থেকেও ছিল না কোন বাঁধা।

সেদিন বিকেল নাগাদ হঠাৎই ১৪ দলের দিক থেকে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, সংঘর্ষ বাধে জামায়াতের সঙ্গে। লগি, বৈঠা স্বয়ংক্রিয় মারণাস্ত্র দিয়ে হঠাৎ আক্রমণের এমন জিঘাংসার সাক্ষী হয়েছে ঢাকা। সন্ধ্যা নাগাদ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে তখন ১১টি লাশ। যার অধিকাংশ বিএনপি-জামায়াতের।

তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থী ও শিবির কর্মী সাইফুল্লাহ মুহাম্মদ মাসুম সে ঘটনায় মারা যান। সময়ের হিসেবে দীর্ঘ ১৮ বছর আগে সন্তান পৃথিবী ত্যাগ করলেও বাবা মায়ের মনে এখনও দগদগে স্মৃতি। মাসুমের ছবি-স্মৃতি হাতড়িয়ে চোখের পানি ফেলা ছাড়া কিই-বা করার আছে তাদের।

গত বছরের অক্টোবরের ২৮ তারিখেই বিএনপির ডাকা নয়াপল্টনের সমাবেশে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে প্রাণ হারায় যুবদল কর্মী শামীম। বৃদ্ধ বাবা, মা আর স্ত্রী, সন্তান রেখে যাওয়া শামীমের পরিবার এখন কেমন আছে?

মাসুমের পরিবার হত্যার বিচার পায়নি, বরং বাবাকে মামলা দিয়ে ঢুকানো হয়েছে জেলে। অসহায় মাকে চাকরি ছাড়তে হয়েছে রাজনৈতিক চাপে। তবুও সন্তানের বিচার চান তারা।

সেদিন জামায়াত-শিবিরের মোট ৬ জন নিহত হয়। সংগঠনটির তৎকালীন সভাপতি শফিকুল ইসলাম মাসুদও সেখানে ছিলেন। জানান, সেদিন কোনোরূপ উস্কানি ছাড়াই তাদের ওপর হয়েছে আক্রমণ। লগি বৈঠা ছাড়াও ছোড়া হয়েছে গুলি।

অন্যদিকে শামীমের পরিবারকে জোর করিয়ে বলানো হয়েছে তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। মামলা করলেও তার পাননি কোন বিচার।

বিএনপি বলছে, সমাবেশের অধিকার কেড়ে নিয়ে বিচারহীনতার সংস্কৃতির প্রতিরূপ ছিল সেদিনের ঘটনা।

এই পরিস্থিতির একটি সুরাহা ছিল সময়ের দাবি। কিন্তু আজও তার সুরাহা না হওয়া বিচারহীনতার সংস্কৃতিকেই নির্দেশনা করে বলে মনে করেন এই বিশ্লেষক।


এএইচ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর