বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে বেশিরভাগ শিশুই নিউমোনিয়া, জ্বর, ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত। গেল একমাসে দ্বিগুণ বেড়েছে রোগী। সিট না পেয়ে হাসপাতালের বারান্দা ও মেঝেতেই চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে রোগীদের।
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত দুই মাসের ছেলেকে নিয়ে ছয়দিন ধরে হাসপাতালে ঝালকাঠির বাসিন্দা ঈশিতা বেগম। একটি বেড পেলেও সেখানে তার সাথেই রয়েছে আরও দুই জন রোগী। এতে রোগ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তার। একই অবস্থা ওয়ার্ডের প্রতিটি বেডের। সেবা নিয়ে অভিযোগ না থাকলেও চিকিৎসার পরিবেশ উন্নত করার দাবি রোগীর স্বজনদের।
দুই মাসের ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে মা ঈশিতা বেগম (বাম পাশে)। ছবি: এখন টিভি
ঈশিতা বেগম বলেন, 'রুম বাড়িয়ে দিতে পারলে ভালো হয়। আর প্রচুর গরম এখানে। থাকা যায় না বাচ্চা নিয়ে। একটা বেডে দুই থেকে তিনজন বাচ্চা রাখা। একজন বাচ্চার সাথে দুইজন অভিভাবক থাকতে পারে না।'
স্বাস্থ্য খাতে অনেক বরাদ্দ, টাকা কোথায় গেলো? এমন প্রশ্ন রোগীর স্বজনদের।
এদিকে বাড়তি রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম অবস্থায় রয়েছে চিকিৎসকরা। তবে কিছুটা সচেতনতা বাড়ালেও চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিলে রোগের সংক্রমণ কমবে বলে মনে করেন তারা।
হাসপাতালের শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার সাহা বলেন, 'যেহেতু সিজন পরিবর্তন হচ্ছে। এই সময় হঠাৎ করে বৃষ্টি, হঠাৎ করে গরম। এজন্য বাচ্চাদের ভেতর বিভিন্ন ভাইরাসজনিত শ্বাসকষ্ট রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে। এদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি।'
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, নানা ধরনের সংকট নিয়েও রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। সংকট দূর হলে সেবার মান আরও বাড়ানো যাবে বলছেন তারা।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারি পরিচালক মনিরুজ্জামান শাহিন বলেন, 'প্রায় ৪০০ এর মতো রোগী ভর্তি থাকে। আমাদের মোট বেডের চেয়ে পাঁচ থেকে ছয় গুণ। এদের চিকিৎসা দিতে আমাদের ডাক্তার, সিস্টার সবারই হিমশিম খেতে হয়। কিন্তু আমাদের উপায় নেই, আমাদের চিকিৎসা দিতে হবে, আমরা দিয়ে যাচ্ছি। আর আমাদের আউটডোরেও অনেক ভিড় থাকে। আসলে আমাদের বেড বাড়ানো, লোকবল বাড়ানো, চিকিৎসক বাড়ানো দরকার।'
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এই হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ৪১ শয্যার কথা থাকলেও ভর্তি থাকছে প্রায় চার শতাধিক শিশু। এর ভেতরে প্রায় ৫০ শতাংশ শিশু ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত।