দুর্গম অঞ্চলে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে ভাসমান হাসপাতাল কিং আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ

দুর্গম অঞ্চলে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে ভাসমান হাসপাতাল কিং আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ
দুর্গম অঞ্চলে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে ভাসমান হাসপাতাল কিং আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ | Ekhon
0

বিনামূল্যে ৩৩ লাখ মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা দিতে নদীবেষ্টিত দুর্গম অঞ্চলে ভেসে বেড়াচ্ছে ভাসমান হাসপাতাল কিং আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ। একেক অঞ্চলের মানুষ সেবা পাবেন আড়াই থেকে তিন মাস পর্যন্ত। সেবায় সন্তুষ্ট হলেও দুর্গম অঞ্চলে স্থায়ী সেবাকেন্দ্র খোলার অনুরোধ জানিয়েছেন সেবাগ্রহীতারা।

চাঁদপুর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরের হাইমচরে আড়াই মাস ধরে নোঙর করে আছে ভাসমান হাসপাতাল কিং আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ। প্রত্যন্ত, নদীবেষ্টিত, উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের সেবায় নিয়োজিত আব্দুল্লাহ বিন আজিজ চ্যারিটি ফাউন্ডেশনের পঞ্চম তথা সর্ববৃহৎ জাহাজ এটি।

ডাক্তার, নার্স, প্যাথলজিস্ট, ফার্মাসিস্ট, ফিজিওথেরাপিস্টসহ ১৮ জনের মেডিকেল টিম দুর্গম অঞ্চলের মানুষের প্রত্যাশা পূরণে কতটা সফল তা শোনা যাক সেবাগ্রহীতাদের মুখেই।

একজন জানান, চাঁদপুর গেলে টিকেট পাই না, ভর্তির সিরিয়াল পাই না, ঠিকমত ডাক্তারও পাওয়া যায়না।

নাগালের মধ্যে হাসপাতাল না থাকায় যারা দীর্ঘদিন রোগ চেপে বসেছিলেন তারা দফায় দফায় এসেছেন সেবা নিতে। কেউ কেউ সপরিবারে বা এক দফায় তিন ধরনের রোগের চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। নিয়েছেন বিনামূল্যের ওষুধ, ফ্রিতে পরীক্ষা করেও ফলাফল পাচ্ছেন একবেলাতেই।

মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য, মুখ, দাঁত, নাক-কান-গলা, বার্ন, প্লাস্টিক ও রিকনস্ট্রাক্টিভ সার্জারির মতো জটিল সমস্যার সমাধান মিলছে এই ভাসমান হাসপাতালে। অস্পষ্ট দৃষ্টি নিয়ে যারা বেঁচেছিলেন তারা বিনামূল্যে করাতে পারছেন চোখের ছানি অপারেশন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বলেন, ‘ভবিষ্যতে এটা বাংলাদেশ সরকার তথা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তরের কাছে পাঁচ বছর শেষে হস্তান্তর হওয়ার কথা। সে কার্যক্রমের বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণের জন্য আমরা এখানে এসেছি।

ফ্রেন্ডশিপের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক রুনা খান বলেন, ‘এটা একটা জার্নি। আমরা কমিটমেন্টের মাধ্যমে একসাথে যাত্রা করবো।’

দেশের দুর্গম অঞ্চলের মানুষ দূরের হাসপাতালে গেলেও অনেকেই একদিনে চিকিৎসা শেষ করে ফিরে আসতে পারেন না। এছাড়া এসব অঞ্চলে চিকিৎসকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদ ফাঁকা থাকায় ঢাকা বা পার্শ্ববর্তী বিভাগীয় শহরে যেতে বাধ্য হন রোগীরা।

অসহায় এসব মানুষের খোঁজ নিতে দুর্গম চরে এসেছেন স্বাস্থ্য সেবা সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও জাহাজ পরিচালনাকারী ফ্রেন্ডশিপের প্রতিষ্ঠাতা।

সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশিপের পরিচালনায় ৫টি ভাসমান হাসপাতাল ইতোমধ্যেই ৩ লাখের বেশি মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিয়েছে।

আগামী ৫ বছরে ৩৩ লাখ রোগীর কাছে পৌঁছাতে চায় কিং আব্দুল্লাহ বিন আজিজ ফাউন্ডেশন। কিন্তু সোনার এই হরিণ যারা একবার পেয়েছে তারা তা ছাড়তে চান। মাঝে মাঝেই এই হাসপাতালের উপস্থিতি বা দুর্গম অঞ্চলে স্থায়ী হাসপাতাল অনুরোধ সেবাগ্রহীতাদের।

এএইচ