দেশে এখন
1

ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় মাটি দিয়ে বেড়িবাঁধ নয়, প্রযুক্তি ব্যবহারের দাবি উপকূলবাসীর

উপকূলীয় এলাকার মানুষের জানমাল রক্ষায় ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে বাঁচার জন্য ঘূর্ণিঝড় - জলোচ্ছ্বাস সহিষ্ণু বেড়িবাঁধ তৈরি করা প্রয়োজন। এমনই দাবি করেছেন উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা। তীব্র ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় এখন শুধু মাটি দিয়ে নয়, বেড়িবাঁধ নির্মাণে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, বরিশাল বিভাগে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এটি পাশ হলে উপকূলবাসী টেকসই বেড়িবাঁধ পাবে।

দেশে বহুবার আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড়। এতে প্রাণ হারিয়েছে অসংখ্য মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সম্পদ ও ফসল। এই পরিস্থিতিতে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ও খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে ১৯৫৯ থেকে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তখন থেকে শুধু মাটি দিয়ে বেড়িবাঁধ তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের সময় জলোচ্ছ্বাসের আঘাতে বাঁধ ভেঙ্গে পানি ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। এতে বাড়ে ক্ষয়ক্ষতি। তাই মজবুত বেড়িবাঁধ তৈরির দাবি উপকূলবাসীর।

স্থানীয়দের একজন বলেন, ‘বেড়িবাঁধ মেরামত করা হলে আমরা একটু রক্ষা পাবো না হলে তো বাঁধ ভেঙ্গে পানি চলে আসবে লোকালয়ে।’

আরেকজন বলেন, ‘খুবই টেকসই একটা বেড়িবাঁধ আমাদের দরকার যেটা থাকলে আমাদের ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।’

ঘূর্ণিঝড় রেমাল বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে পার হওয়ার সময় তাণ্ডব চালায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়। স্থানীয়দের মতে, ঘূর্ণিঝড় ৩৬ ঘণ্টারও বেশি সময় স্থায়ী হয়েছিলো। আঘাতে পটুয়াখালীর সোনাতলা নদীর গোইয়াতলা পয়েন্টের ৪৬ নাম্বার পোল্ডারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ অবস্থা হয়েছে অন্যান্য বেড়িবাঁধেও।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল হান্নান বলেন, ‘বৈদেশিক সহায়তা পেলে আমাদের এইসব এলাকা টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা সম্ভব হবে। এর মাধ্যম আমরা অনেক ক্ষয়ক্ষতি কমায় আনতে পারবো।’

ঘূর্ণিঝড় - জলোচ্ছ্বাস সহিষ্ণু বেড়িবাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনায় থাকছে নানা উদ্যোগ। বাঁধের উচ্চতা আগের থেকে বাড়ানো হবে। বাঁধের বাইরের পাশে মাটির পরিবর্তে ব্যবহার করা হবে কংক্রিট ব্লক।

সারাদেশে বেড়িবাঁধের দৈর্ঘ্য ১৬ হাজার ৬৩১ কিলোমিটার। পোল্ডার বা উপকূলীয় বাঁধ আছে ১৪৭ টি। যার দৈর্ঘ্য ৫ হাজার ৮১৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগের বাঁধের দৈর্ঘ্য ৩ হাজার ২৬৭ কিলোমিটার। আর এই বিভাগে পোল্ডারের সংখ্যা ৮০ টি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের মতে, ৬০ বা ৭০ এর দশকে এই বাঁধগুলো নির্মাণ করা হয়েছিলো জোয়ারের পানি থেকে রক্ষ্যার জন্য। ইতিমধ্যে এই ৫০ বা ৬০ বছরের মধ্যে বহু ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা করেছে এই বাঁধগুলো। এখন এগুলো অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। এই বাঁধগুলো টেকসই ও মজবুত এবং ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস মোকাবেলা করে তৈরি করা হলে জীবন ও প্রাণহানি এবং ফসলের হানী অনেকটাই কম হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর