কৃষি পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বন্যার পানি থেকে রক্ষায় ১৯৭৯-৮০ অর্থবছরে শুরু হয় মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ। প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই সেচ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৮৮ সালে। শুরুর দিকে এই প্রকল্পে চাষযোগ্য জমি ছিল ১৫ হাজার ৪৬৫ হেক্টর। কিন্তু এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ছয় হাজার হেক্টর।
মতলব উত্তর উপজেলার সিপাহীকান্দি, মান্দারতলী, রাঢ়ীকান্দি, ছৈয়ালকান্দি, নন্দলালপুরসহ প্রায় প্রতি গ্রামেই কৃষিজমিতে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ স্থায়ী-অস্থায়ী নানা স্থাপনা। ফলে সেচ প্রকল্পে কৃষি জমির পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে।
কৃষকদের মধ্যে একজন বলেন, 'বাড়িতে জায়গা না থাকলে কী করবো? কিছু করার নাই। থাকার জন্য হলেও দানী জমিতে বাড়ি করতে হচ্ছে।'
'মেঘনা-ধনাগোদা' সেচ প্রকল্প থেকে প্রতিবছর ধান, ভুট্টাসহ প্রায় এক লাখ ১১ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হয়। এর মধ্যে ধানই উৎপাদন হয় প্রায় ৮৯ হাজার মেট্রিক টন। সেচ প্রকল্প এলাকার কৃষি জমি যাতে অকৃষি খাতে ব্যবহার না হয় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলছেন কৃষি বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড।
মেঘনা-ধনাগোদা পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সেলিম শাহেদ বলেন, 'প্রতিনিয়ত মানুষ ঘরবাড়ি করছে। ঘরবাড়ি করার ফলে কৃষি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। বিষয়টা আসলে অ্যালার্মিং। আমরা ভবিষ্যতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে এটার পদক্ষেপ নিবো।'
চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, 'জমি যে হারে কমে যাচ্ছে সে হারে কিন্তু উৎপাদন কমেনি। আরও যদি জমি কমে যায় তাহলে খাদ্যের জোগান দিতে পারবে না।'
চলতি বছর 'মেঘনা-ধনাগোদা' সেচ প্রকল্পে বোরো ধান আবাদ হয়েছে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার হেক্টর জমিতে। যেখান থেকে প্রায় ২৯ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে।




