ঝুঁকিপূর্ণ-বেড়িবাঁধ
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় মাটি দিয়ে বেড়িবাঁধ নয়, প্রযুক্তি ব্যবহারের দাবি উপকূলবাসীর
উপকূলীয় এলাকার মানুষের জানমাল রক্ষায় ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে বাঁচার জন্য ঘূর্ণিঝড় - জলোচ্ছ্বাস সহিষ্ণু বেড়িবাঁধ তৈরি করা প্রয়োজন। এমনই দাবি করেছেন উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা। তীব্র ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় এখন শুধু মাটি দিয়ে নয়, বেড়িবাঁধ নির্মাণে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, বরিশাল বিভাগে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এটি পাশ হলে উপকূলবাসী টেকসই বেড়িবাঁধ পাবে।
ঘূর্ণিঝড়ের কথা শুনলেই আতঙ্কিত হন উপকূলবাসী
বিগত বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধের মেরামত শেষ না হওয়ায় চিন্তিত উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা। ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষত যেতে না যেতে আর এক ঘূর্ণিঝড়ের আসার খবরে আতঙ্কিত তারা। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি, জরুরি ভিত্তিতে কিছু ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত করা হয়েছে। অপরদিকে জীবন বাঁচাতে ঘূর্ণিঝড়ের সময় আশ্রয়কেন্দ্রে যাবার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
ভারী বৃষ্টি হলেই নদীর পানি বেড়ে ভাঙে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ
বর্ষা এলেই আতঙ্কে দিন কাটে ফেনী জেলার নদী তীরবর্তী জনপদের বাসিন্দাদের। ভারী বৃষ্টি হলেই নদীর পানি বেড়ে ভাঙে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। লোকালয়ে প্রবেশ করে পানি। ক্ষতি হয় কোটি কোটি টাকার ফসলি জমি, নদীগর্ভে বিলীন হয় শেষ সম্বল। দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ দূর করতে ৮শ' কোটি টাকার প্রকল্প নেয়ার কথা বলছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
খুলনার ৫৫টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত অসংখ্য গ্রাম
খুলনার উপকূলীয় অঞ্চলগুলো প্লাবিত হওয়ার অন্যতম কারণ দুর্বল বেড়িবাঁধ। লোকালয় বাঁচাতে নিজ উদ্যোগে বাঁধ সংস্কারের কাজ করছেন স্থানীয়রা। দ্রুত বাঁধ সংস্কার না করতে পারলে ক্ষতি বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। খুলনার ৫৫টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে ও উপচে প্লাবিত হয়েছে অসংখ্য গ্রাম। এর মধ্যে ৩২টি পয়েন্টে ১.৭০৫ কিলোমিটার বাঁধ ভেঙে গেছে। আর ২৩টি পয়েন্টের ৩.৬৮৮ কিলোমিটার বাঁধ ওভারফ্লো হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় চার লাখ মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় রিমালে ৬১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত
ঘূর্ণিঝড় রিমালে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের ৬১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৫টি স্থানে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকে গেছে লবণ পানি। নোয়াখালীতে ভেসে যায় কয়েক কোটি মাছের ঘের। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উপকূলীয় ৪ উপজেলার গবাদি পশু। পানিতে ধসে গেছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ৫০ ফুট বেড়িবাঁধ। এছাড়া জেলার মৎস্য অধিদপ্তর জানিয়েছে কলাপাড়ায় আড়াইহাজার পুকুর, ৪৬৫ টি মাছের ঘের তলিয়ে গেছে।
বাঁধ নিয়ে ঝুঁকি ও সুপেয় পানি সংকট নিত্যসঙ্গী উপকূলবাসীর
প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে যুদ্ধ করে জীবন চলে খুলনাঞ্চলের উপকূলবাসীর। বেড়িবাঁধ নিয়ে ঝুঁকি ও সুপেয় পানি সংকট তাদের নিত্যসঙ্গী। নানা সংকটে খুলনার কয়রা উপজেলার আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটেনি বহু বছর ধরে। পূর্ব-পুরুষদের পেশা নদী থেকে মাছ শিকার ও কৃষিকাজেই আটকে আছে তাদের জীবন।
ঘূর্ণিঝড় মৌসুমে দুশ্চিন্তায় উপকূলবাসী
ঘূর্ণিঝড়ের মৌসুম এলেই উপকূলীয় এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধের আশপাশের বাসিন্দারা দুশ্চিন্তায় পড়েন। বরিশাল বিভাগে উপকূলীয় বাঁধের ৩২টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এর মধ্যে ৮টি পয়েন্ট বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। আগেভাগেই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামত না হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে পারে বলে মনে করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞরা।