রেলপথ পুরোপুরি প্রস্তুত থাকলেও বাকি ছিল কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন ভবন, প্ল্যাটফর্ম এবং সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ। তাই উদ্বোধনের ৯ মাসেও চালু করা যায়নি আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ। এর মধ্যে গেলো ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর কাজ বন্ধ করে ভারতে চলে যান প্রকল্প ব্যবস্থাপকসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অন্তত ৫ প্রকৌশলী। এতে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা।
প্রায় এক মাস বন্ধ থাকার পর গেলো মাসে ফের শুরু হয়েছে রেলপথ প্রকল্পের অবশিষ্ট নির্মাণ কাজ। এতে অনিশ্চয়তা কেটে গতি ফিরেছে প্রকল্পে। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন ভবনের কাজ। এখন সংযোগ সড়ক ও প্ল্যাটফর্মের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা।
কয়েক দফা ট্রায়াল রান শেষে গেলো বছরের ১ নভেম্বর বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বহুল কাঙ্ক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের উদ্বোধন করেন। মোট ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রেলপথের বাংলাদেশ অংশ ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার। প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ করেছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড।
নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও ভারতীয় প্রকৌশলীরা ফেরত না আসলেও দেশিয় প্রকৌশলীদের তত্ত্বাবধানে কাজ চলছে পুরোদমে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের আশা চলতি মাসেই কাজ শেষে সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রকৌশলী মো. রিপন শেখ বলেন, ‘কাস্টমস ভবন থেকে সংযোগ সড়ক বাকি ছিল সেটাও কাজ শেষের দিকে। বিটুমিন দেয়া হয়েছে রোডে কিছুদিনের ভিতর শেষ হবে কাজ।’
ইতোমধ্যে এ রেলপথ দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এ রেলপথে পণ্য আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্যে নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে বলে আশা প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রুহি বলেন, ‘এটার উদ্দেশ্য ছিলো দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করা। প্রজেক্ট শেষ হলে হ্যান্ডওভারের পর আমদানি-রপ্তানির কাজ শুরু হবে।’
২০১৮ সালের জুলাইয়ে আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ শুরু হয়। তবে করোনা মহামারিসহ নানা সংকটে বিলম্বিত হয় প্রকল্পের কাজ। বাংলাদেশ অংশের ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার রেলপথসহ আনুষাঙ্গিক স্থাপনা নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২৪১ কোটি টাকা।