দেশে এখন
0

মাটির পরিবর্তে পাট ও দড়ি দিয়ে প্রতিমা গড়ে সাড়া

মহালয়ার মধ্য দিয়ে সূচনা হয়েছে দেবীপক্ষের। পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা ৯ অক্টোবর ষষ্ঠীপূজা ও দেবী বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হলেও, আগামী এক সপ্তাহ উৎসবে মেতে থাকবেন কলকাতাবাসী। মণ্ডপ ও দেবীর সাজসজ্জায় বৈচিত্র্যের জন্য পশ্চিম বাংলার শারদীয় দুর্গাপূজার সুনাম বিশ্বজোড়া। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মৌলিক ভাবনা, আলোকসজ্জা, অভিনব প্রতিমা- নানা চমক থাকছে পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায়।

পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বনিকপাড়া আগমনী সংঘের পূজা মণ্ডপ। মাটির বদলে পাট দিয়ে প্রতিমা গড়ে সাড়া ফেলেছেন বহরমপুরের শিল্পী রাজেশ দাস।

মুর্শিদাবাদ জেলায় পাটের ন্যায্য দাম না পাওয়া চাষিদের কথা ভেবে মাটির পরিবর্তে পাট ও পাটের দড়ি দিয়ে প্রতিমা গড়ার ভাবনা আসে শিল্পীর। এরপর টানা তিন মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করে পাট দিয়ে গড়ে ফেলেন মা দুর্গার সোনালি প্রতিমা। পাটের রঙিন আশ ব্যবহার করে সুনিপুণ হাতে সাজিয়ে তোলেন সিংহবাহিনীকে। বনিকপাড়া আগমনী সংঘের জন্যে অভিনব এই পাটের দুর্গা প্রতিমা গড়েছেন শিল্পী

প্রতিমার কারিগর রাজেশ দাস বলেন, 'মূলত এই দুর্গাটা তৈরি হয়েছে জুট দিয়ে। পাট থেকে যে জিনিস গুলো তৈরি হয় সেগুলো দিয়েই প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে।'

১২ বছর বয়সে বাবার কাছে প্রতিমা গড়ার হাতেখড়ি রাজেশের। ২০১২ সালে বর্ধমান আর্ট কলেজ থেকে পাশ করে নিজের মেধা ও সৃজনশীলতা দিয়ে মৌলিক শিল্প চর্চার প্রতি মন দেন তিনি। ২০২২ সালে কাগজ দিয়ে দুর্গা প্রতিমা গড়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন রাজেশ। দর্শনার্থীদের প্রশংসা কুড়ানোর পাশাপাশি জিতেছেন একাধিক পুরস্কারও। এছাড়া পাট ও খবরের কাগজের টুকরো দিয়ে গণেশ ও তিরুপতির মূর্তি নির্মাণ করে জেলা থেকে রাজ্য পর্যায়েও পুরস্কৃত হয়েছেন তিনি। স্থান পেয়েছেন ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডেও।

আগমনী সংঘ সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি'র উদ্যোক্তারা বলছেন, পাট ও পাটজাত পণ্যের জন্য মুর্শিদাবাদের কদর ভারতজুড়ে। কিন্তু সঠিক দাম না পাওয়ায় মানবেতর জীবন কাটে পাট চাষিদের। সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা ও পাটচাষিদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেয়াই তাদের উদ্দেশ্য।

পূজা উদ্যোক্তা সুরজিৎ মিস্ত্রি বলেন, 'কৃষকরা যেমন পাট শিল্প করতে চাই। জমিতে পাট লাগানোর পর, সেটা বাজারে আনার জন্য এই পাট শিল্প দিয়ে আমরা প্রতিমা তৈরির কাজ করতে চাই।'

পূজার সময় বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় দর্শনার্থীদের সংখ্যা নিয়ে কিছুটা উদ্বেগে আয়োজকরা। তবে, মা দুর্গার আগমনে কেটে যাবে সব দুর্যোগ, শান্তি ও স্বস্তি ফিরবে পৃথিবীতে- এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।