ঘরের সকল আসবাবপত্র টানা ৫ দিন ছিলো পানির নিচে। যা এখন ব্যবহার অনুপযোগী। তাই নিজের ঘরেই যেনো অচেনা হয়ে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির সুন্দরপুর গ্রামের মোহম্মদ মামুনের কাছে।
শুধু আসবাবই নয় নষ্ট হয়েছে পাসপোর্ট, দলিল দস্তাবেজসহ বহু প্রয়োজনীয় কাগজ। হঠাৎ সৃষ্ট বন্যা এতটা ভয়াবহ হবে ভাবতেও পারেনি তার পরিবার।
মোহম্মদ মামুন বলেন, ‘পানি হওয়াতে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমার বিদেশে যাওয়ার পাসপোর্ট নষ্ট হয়ে গেছে।’
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, মিরসরাইয়ের অসংখ্য পরিবারের চিত্র প্রায় একই। পানি নামার পর ক্ষয়ক্ষতি দেখে দিশেহারা সবাই।
স্মরণকালের ভয়াবহ এ বন্যায় জেলার ১৫ উপজেলার মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ১১ উপজেলা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষির। আকস্মিক বন্যায় নষ্ট হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার হেক্টর জমির আমন-আউশ ও গ্রীষ্মকালীন সবজি।
বন্যায় পুকুর জলাশয় কিংবা প্রজেক্টের মাছ বেরিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে চাষিরা। এছাড়া তীব্র স্রোত ও বেশ কয়েক দিন পানির নিচে থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গ্রামীণ সড়ক। এছাড়া অনেক স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি পড়ে গিয়ে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে বিভ্ন্নি এলাকা।
মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছেন। তবে, পানি এখনও পুরোপুরি না নামায় প্রকৃত ক্ষতি নিরূপণ সম্ভব হয়নি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ছাইফুল্লাহ মজুমদার বলেন, ‘উজানের পানির যে স্রোত, এর কারণে প্রচুর কাঁচা রাস্তা, পাকা রাস্তা এবং ইট বিছানো সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
ফটিকছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘জরুরি যেসব জায়গার রাস্তাগুলোয় ফাটল ধরেছে, সেখানে স্থানীয় পর্যায়ে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়াও বন্যায় মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করা হচ্ছে।’
স্মরণকালের ভয়াবহ এ বন্যায় চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা।